জাপানে চালের দাম দ্বিগুণ হওয়ার প্রেক্ষাপটে বিতর্কিত মন্তব্য করে পদত্যাগে বাধ্য হলেন দেশটির কৃষিমন্ত্রী তাকু এতো। সম্প্রতি তিনি বলেন, “আমার চাল কেনার দরকার হয় না, কারণ সমর্থকরা আমাকে প্রচুর চাল উপহার দেন।” এই মন্তব্য জনসাধারণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন দেশটিতে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে এবং সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বেড়েছে।
ঘটনার পরপরই মন্ত্রী ক্ষমা চেয়ে বলেন, তিনি “অতিরিক্ত বলে ফেলেছিলেন”। তবে বিরোধী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাবের হুমকির মুখে তাকু এতো শেষমেশ পদত্যাগ করেন। তার এই পদত্যাগ প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবারের সংখ্যালঘু সরকারের জন্য বড় ধাক্কা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
চালের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে সরকারের ভুল পূর্বাভাস। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে কৃষি মন্ত্রণালয় চালের চাহিদা ৬.৮ মিলিয়ন টন হিসেবে ধরেছিল, যেখানে প্রকৃত চাহিদা ছিল ৭.০৫ মিলিয়ন টন। মহামারি পরবর্তী পর্যটক বৃদ্ধি ও বাইরে খাওয়ার প্রবণতা এই চাহিদা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
অন্যদিকে, উচ্চ তাপমাত্রার কারণে চালের উৎপাদন কমেছে এবং ফসলের গুণমানও হ্রাস পেয়েছে। ফলে, অনেক দোকানে চাল সীমিত করে বিক্রি করা হচ্ছে। কৃষকরা এই দামে কিছুটা লাভবান হলেও সাধারণ ভোক্তারা বিপাকে পড়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি মজুত থেকে চাল ছাড়লেও বাজারে দাম কমেনি।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে প্রথমবার মা হওয়া মেমোরি হিগুচি বলেন, “চালের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে, আমাদের নিজেদের খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হতে পারে।”
এই সংকটে জাপান সরকার দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো চাল আমদানি শুরু করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকেও চাল আনার বিষয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। তবে, অনেক জাপানি ভোক্তা এখনও স্থানীয় চালকেই বেশি গুরুত্ব দেন।