সম্প্রতি সিলেটজুড়ে মানব পাচারের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কাজের সন্ধানে বাইরে যাওয়া তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। দুটি পৃথক ঘটনায় ছয় তরুণ এবং দুই তরুণী পাচারকারীদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়ার পর আতঙ্ক আরও বেড়েছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের শফিউল্লাহ নামের এক ঠিকাদার রাজমিস্ত্রির কাজ দেওয়ার কথা বলে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ছয় তরুণ—রশিদ আহমদ, মারুফ আহমদ, শাহিন আহমদ, এমাদ উদ্দিন, খালেদ হাসান ও আবদুল জলিল—কে কক্সবাজারে নিয়ে যান।
১৬ এপ্রিল পরিবারের সঙ্গে তাদের শেষ যোগাযোগ হয়। এরপর থেকে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। উদ্বিগ্ন পরিবার ২১ এপ্রিল কক্সবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
২২ এপ্রিল রশিদ আহমদ তার ভাইকে ফোন করে জানায়, তাদের টেকনাফের বাহারছড়ার একটি পাহাড়ি আস্তানায় আটকানো হয়েছে এবং রাতেই ট্রলারে করে ইন্দোনেশিয়ায় পাচার করার পরিকল্পনা রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, দালালরা জনপ্রতি ২০ হাজার টাকায় তাদের কিনে, পরে ইন্দোনেশিয়ার একটি গ্রুপের কাছে চার লাখ টাকায় বিক্রি করার চুক্তি করেছিল।
অন্যদিকে, গার্মেন্টে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সিলেট শহরতলীর পীরের বাজার এলাকার দুই তরুণীকে কক্সবাজারে পাচার করা হয়। শাহনাজ নামের এক নারী ও তার ছেলে ইমন তাদের কক্সবাজারে নিয়ে যান। ৭ এপ্রিল ডলফিন মোড়ে তাদের গ্রহণ করা হয় এবং পরে আবাসিক হোটেলে রেখে পালিয়ে যান। এরপর ১৪ দিন ধরে দুই তরুণীকে আটকে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হয়।
পরিবার ৯ এপ্রিল শাহপরাণ থানায় জিডি করলে পুলিশের তৎপরতায় পাচারকারীরা তাদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। বর্তমানে দুই তরুণী সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা এএসপি মো. সম্রাট বলেন, “ঘটনাগুলো অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কারা এ চক্রের সঙ্গে জড়িত, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”