২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে কতজন নিহত হয়েছিলেন—তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিতর্কের মধ্যেই এবার ৯৩ জনের একটি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। হেফাজত জানিয়েছে, নিহতদের পরিচয়সহ তালিকাটি প্রাথমিক খসড়া হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে এবং যাচাই-বাছাই শেষে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে।
সংগঠনের জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেফায়েতুল্লাহ আজহারী বলেন, “এটি চূড়ান্ত নয়, বরং অনুসন্ধান চলছে। অনেক পরিবার এখনও সামনে আসেনি। প্রকৃত সংখ্যাটি আরও বেশি হতে পারে।” তালিকায় নিহতদের নাম, বয়স, ঠিকানা এবং পরিবারের সদস্যদের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। অধিকাংশ নিহত যুবক বয়সী বলে জানানো হয়েছে।
ঘটনাটিকে ঘিরে বরাবরই বিভিন্ন পক্ষ ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে আসছে। মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট একটি তালিকা প্রকাশ করে, যেখানে ৬১ জন নিহতের তথ্য রয়েছে। অন্যদিকে, বিবিসির তৎকালীন ঢাকা প্রতিনিধি মার্ক ডামেট অনুসন্ধানে জানান, ৫ ও ৬ মে’র সহিংসতায় কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত হন।
প্রসঙ্গত, ব্লগারদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এবং নারীনীতির বিরোধিতাসহ ১৩ দফা দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলাম রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করে। হাজার হাজার কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাধারণ মুসলমান ওই কর্মসূচিতে অংশ নেন। মধ্যরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়, যেখানে ব্যাপক গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ব্যবহার করা হয়। সেই রাতের ঘটনাকে ঘিরে এখনও রয়েছে অস্পষ্টতা ও রাজনৈতিক বিতর্ক।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত আজও হয়নি। হেফাজতের এই তালিকা সেই দাবি নতুন করে সামনে এনেছে। অনেকে এটিকে বিচারহীনতার আরেক উদাহরণ হিসেবে দেখছেন।