বরগুনায় ডেঙ্গু জ্বর ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জুন মাসের প্রথম ১৫ দিনেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৬১ জন। মে মাসে এই সংখ্যা ছিল ৭৮৪ জন এবং এপ্রিল মাসে ১৮০ জন। এখন পর্যন্ত বরগুনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯০৩ জনে।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, চলতি জুন মাসে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে মারা গেছেন ৯ জন। বাকি ৮ জন ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গত রবিবার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের এক সিনিয়র নার্সের ৩ বছর বয়সী শিশুর মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বরগুনার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা, অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং লবণাক্ত পানির কারণে বাড়িতে পানি জমিয়ে রাখার প্রবণতা—এসবই এডিস মশার বংশবিস্তারকে বাড়িয়ে তুলেছে। ঝোপঝাড়, ড্রেন ও খোলা পাত্রে জমে থাকা পানি মশার প্রজননের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জনসচেতনতার অভাব ও স্থানীয় প্রশাসনের অপর্যাপ্ত উদ্যোগেই পরিস্থিতির এতটা অবনতি হয়েছে। হাসপাতালের এক রোগী জাকিয়া সুলতানা বলেন, “মশার মতো একটা ছোট প্রাণীর কাছে আমরা এতটা অসহায় হয়ে যাব, ভাবতেও পারিনি। এখনই কিছু না করলে আরও বড় বিপদ আসবে।”
বিশেষজ্ঞরা অবিলম্বে মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার, ব্যাপক জনসচেতনতামূলক প্রচার এবং স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। নইলে বরগুনা দেশে ডেঙ্গুর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলার একটি হয়ে উঠতে পারে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।