Ridge Bangla

লুটপাট ও পাচারের দায়ে শেখ পরিবারসহ ১০ শিল্পগোষ্ঠীর পৌনে দুই লাখ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

গতকাল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারসহ দেশের ১০টি বড় শিল্পগোষ্ঠীর কাছ থেকে প্রায় পৌনে দুই লাখ কোটি টাকার সম্পদ ও অর্থ জব্দ করা হয়েছে। এসব অর্থ ও সম্পদ লুটপাট, দুর্নীতি ও পাচারের অভিযোগে আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় আটক করা হয়েছে। সরকার এই অর্থ দিয়ে ‘লুটের টাকা ব্যবস্থাপনা তহবিল’ নামে একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে যাচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার ব্যাংক অর্থ এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ ইতোমধ্যে ফ্রিজ করা হয়েছে। এর বাইরে বিদেশে পাওয়া গেছে প্রায় ২৫০ কোটির বেশি টাকার সম্পদ, যা ইতোমধ্যে জব্দ করা হয়েছে।

সরকারি তদন্তে শেখ পরিবার ও ১০টি শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতি, কর ফাঁকি ও ব্যাপক অর্থ পাচারের প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে এস আলম গ্রুপ সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে, কারণ তাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি পাচার ও অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক মামলা হয়েছে।

সরকার এই অর্থ ফেরত আনতে একটি বিশেষ অধ্যাদেশ প্রণয়ন করছে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাংকের একটি বিশেষজ্ঞ দলের সহায়তায় প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানান, দুটি তহবিল গঠন করা হবে—একটি ব্যাংকগুলোর ক্ষতিপূরণের জন্য, আরেকটি জনসেবামূলক কাজে ব্যয়ের জন্য। সব কার্যক্রমই আদালতের অনুমোদন ও আইনি কাঠামোর মধ্য দিয়ে পরিচালিত হবে। তিনি বলেন, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে সাধারণত চার-পাঁচ বছর সময় লাগে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু সম্পদ ফ্রিজ করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও জানান, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এর আগের ব্যবস্থাপনা দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার ডিজিটাল মানি তৈরি করেছে এবং প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার সরকারি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অর্থ আত্মসাৎ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে আশঙ্কা করা হয়েছে, নগদের বর্তমান কর্তৃপক্ষ প্রমাণ লোপাটের জন্য সিস্টেম থেকে তথ্য মুছে ফেলতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদকে শুধু ক্যাশ ইন-ক্যাশ আউট কার্যক্রম পরিচালনার সীমিত অনুমতি দিয়েছে এবং অন্য কোনো বড় লেনদেন অনুমোদন করেনি।

আরো পড়ুন