সম্ভাবনাময় অনেক অভিনেত্রী, যারা খুব অল্পদিনেই নিজের যোগ্যতা ও পরিশ্রমের বলে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন, তারা খুব দ্রুতই শোবিজ জগত ছেড়ে হারিয়ে গেছেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। খ্যাতির শীর্ষে অবস্থান করেও বিভিন্ন কারণে মিডিয়া থেকে নিজেদের আড়াল করে নিয়েছেন তারা। এমন অনেক নায়িকা রয়েছেন, যারা এখনো দর্শকদের গল্পের আড্ডায় মধ্যমণি হয়ে থাকেন। আজ এমনই কয়েকজন নায়িকাকে নিয়ে প্রতিবেদনটি সাজানো হয়েছে।
মোনালিসা
তুমুল জনপ্রিয় মুখ মোজেজা আশরাফ মোনালিসা, যাকে সবাই মোনালিসা নামেই ডাকে; যার হাসিতে মুগ্ধ হয় হাজারও তরুণ-যুবক। একসময় মডেলিং ও অভিনয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন তিনি। এখন আর আগের মতো পর্দায় দেখা যায় না তাঁকে। তিনি এখন নিউইয়র্ক প্রবাসী। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাংলা চ্যানেল টাইম টিভির প্রোগ্রাম প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। মাঝে মাঝে দেশে আসেন। সম্প্রতি কাজে ফেরার ইচ্ছা পোষণ করেছেন এ অভিনেত্রী।
শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি
আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি। ‘বাংলালিংক, দেশে’র বিজ্ঞাপন দিয়ে রাতারাতি পেয়েছিলেন আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। একে একে নাটক, চলচ্চিত্র, বিজ্ঞাপনে কাজ করে নিজের অবস্থান বেশ পাকাপোক্তই করে নিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তিনি বেশি আলোচিত ছিলেন। মাঝে নাটকে দেখা গেলেও তিনি আর নিয়মিত হননি। জানা যায়, একমাত্র মেয়ে ওয়ারিশাকে নিয়ে কানাডার মন্ট্রিলে রয়েছেন তিনি।
প্রিয়াংকা অগ্নিলা ইকবাল
খুব জনপ্রিয় নাটক ‘কথাবন্ধু মিথিলা’। এই নাটক দেখেনি এমন দর্শক পাওয়া খুবই দুষ্কর। বলছি সেই অভিনেত্রী প্রিয়াংকা অগ্নিলা ইকবালের কথা। ২০০১ সালে গিয়াসউদ্দিন সেলিমের ‘বিপ্রতীপ’ নাটকে অভিনয় করে ক্যারিয়ারে নতুন অবয়বে ফিরে আসেন। তবে মিডিয়ায় অনিয়মিত হওয়ার কারণে নাম শুনে অনেকেই তাঁকে ভুলে গেছেন। অসংখ্য টিভি নাটকের পাশাপাশি টিভি বিজ্ঞাপনেও অভিনয় করেছেন। তিনি বর্তমানে কানাডা ও ঢাকায় উভয় স্থানে বসবাস করেন।
আফসান আরা বিন্দু
লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার ২০০৬-এর বিজয়ী আফসান আরা বিন্দু। লাক্স ও বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হয়ে দর্শক-হৃদয় জয় করেছেন। ছোট পর্দার অভিনয়, মডেলিংয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। মাঝে একটি ওয়েব ফিল্মে অভিনয় করলেও এখন আর নিয়মিত নন।
ফারজানা রিয়া চৌধুরী
মডেল, নৃত্যশিল্পী, উপস্থাপিকা ও অভিনেত্রী ফারজানা রিয়া চৌধুরী। ১৯৯২ সালে কোকোলা বিস্কুটের বিজ্ঞাপনে প্রথম মডেলিং করেন। ২০০৮ সালে বৈমানিক মিনহাজকে বিয়ে করেন, পরে তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর ২০১৩ সালের মার্চে আমেরিকা প্রবাসী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ইভান চৌধুরীকে বিয়ে করেন।
পল্লব চক্রবর্তী
একসময়ের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেতা পল্লব। বিটিভি যুগে অসংখ্য কমার্শিয়াল বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর তিনি অভিনয় করেন অনেক প্যাকেজ নাটকে। ২০১৪ সালে ‘হঠাৎ দেখা’ নাটকের মাধ্যমে ফেরেন, তবে নিয়মিত হননি।
সাবরিনা সাকা মীম
নতুন কুঁড়ির চ্যাম্পিয়ন সাবরিনা সাকা মীম। নাচ, গান ও অভিনয়- তিনটিতেই সেরা। টিভি নাটক, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানেও ছিল তার সরব উপস্থিতি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর গতিপথ বদলে যায়। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে কর্মরত।
ইপসিতা শবনম শ্রাবন্তী
‘রং নম্বর’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে এই জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রীর। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।
ফারিয়া চৌধুরী
বিটিভি যুগে ‘কাজল’ নাটকের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পান ফারিয়া চৌধুরী। তৌকীর, টনি ও মাহফুজ আহমেদের সঙ্গে তাঁর জুটি ছিল দারুণ জনপ্রিয়। এখন তিনি আর অভিনয়ে নেই।
জেবা
১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হৃদয়ের আয়না’ ছবিতে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন। কিন্তু ওই এক ছবির পর তাঁকে আর কোনো চলচ্চিত্রে দেখা যায়নি।
শিমলা
‘ম্যাডাম ফুলি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন শিমলা। একই ছবিতে ‘ফুলি’ এবং ‘শিমলা’ চরিত্রে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন। তবে এরপর তিনি আর আলো ছড়াতে পারেননি।
তামান্না
‘ত্যাজ্যপুত্র’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন। এরপর রুবেলের বিপরীতে ‘ভণ্ড’ ছবিতে দর্শকদের মন জয় করেন। ২০১৩ সালে ‘পাগল তোর জন্য রে’ ছবিতে শেষ অভিনয় করেন। এরপর স্বামীর সঙ্গে সুইডেনে চলে যান।
ইরিন জামান
চিত্রনায়িকা মৌসুমীর ছোট বোন। ১৯৯৯ সালে ‘অনন্ত ভালোবাসা’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পান। এরপর বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করলেও ধীরে ধীরে হারিয়ে যান। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।
লিমা
১৯৯৪ সালের শেষ দিকে সালমান শাহর সঙ্গে ‘প্রেমযুদ্ধ’ ছবিতে অভিনয় করেন লিমা। পরের বছর ‘কন্যাদান’ ছবিতে আবারো জুটি বাঁধেন সালমান-লিমা। এরপর তিনি পুরোপুরি হারিয়ে যান।
এছাড়াও জনপ্রিয় অবস্থায় অভিনয় ছেড়েছেন মিলা হোসেন, সুরাইয়া হুদা রাত্রী, শ্যামা, বৃষ্টি, সাবরিনা ও কাঞ্চিসহ আরও অনেকে, যারা একসময় সিনেমায় এসে দ্যুতি ছড়িয়েছেন।
