স্বামী মুফতি তালহা ইসলামের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন একসময়ের আলোচিত চিত্রনায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপি। সোমবার (১২ মে) এই মামলা দায়ের করেন তিনি। বুধবার (১৪ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস।
হ্যাপি বলেন, “এতদিন মারধরের ভয়ে চুপ ছিলাম। এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় সবকিছু প্রকাশ করতে বাধ্য হচ্ছি।” আইনজীবী জানান, মডেলিং ও চলচ্চিত্র ছেড়ে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে জীবন শুরু করা হ্যাপি সাত বছর আগে সাবেক সংসদ সদস্য মুফতি শহিদুল ইসলামের ছেলে মুফতি তালহা ইসলামের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তিনি জানতে পারেন, তালহার একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এবং এদের মধ্যে অনেককে তিনি স্বল্প সময়ের জন্য বিয়েও করেন। হ্যাপির দাবি অনুযায়ী, তালহা ইসলাম এখন পর্যন্ত নয়টি বিয়ে করেছেন।
হ্যাপি অভিযোগ করেন, যৌতুকের জন্য তালহা প্রায়ই তাকে ও তার সন্তানকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। সামান্য কথার প্রতিবাদ করলেই গায়ে হাত তুলতেন। বারবার তালাক চাইলেও তিনি অনুমতি দেননি। বরং তালাকের শর্ত হিসেবে এক কোটি টাকা দাবি করেন অথবা সন্তানকে আজীবনের জন্য দিয়ে দিতে বলেন।
মামলার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে হ্যাপি বলেন, “মামলা করার পর রাতেই তালহা লোকজন নিয়ে এসে আমার ৫০-৬০ লাখ টাকার ব্যবসায়িক মালামাল নিয়ে যায় এবং মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন।”
অভিযোগের বিষয়ে তালহা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে একটি সূত্রে জানা গেছে, তিনি বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’ সিনেমার মাধ্যমে হ্যাপি চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন। পরে ২০১৪ সালে জাতীয় ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে তুমুল আলোচনার জন্ম দেন। এ নিয়ে রুবেলকে গ্রেপ্তার ও জামিনে মুক্তিও দেওয়া হয়, যদিও আদালত পরবর্তীতে অভিযোগের যথাযথ প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেন। পরে হ্যাপি নিজেই সব অভিযোগ তুলে নেন এবং রুবেলকে ক্ষমা করে দেন।