একসময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সরব থাকা অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন হঠাৎ করেই আবারও আলোচনায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি দেওয়া এক পোস্টে তিনি স্বীকার করেছেন, বিগত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে তিনি ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
বাঁধন লিখেছেন, “আমি চাই না, আগামী জাতীয় নির্বাচনে আবারও আগের মতো রাজনৈতিক কারসাজি ও কৌশলের পুনরাবৃত্তি ঘটুক। আমি নিজে ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন ঘিরে চলা দুর্নীতি, অনিয়ম ও কারচুপির প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলাম। সত্যি বলতে, আমি নিজেই সেসবের অংশ ছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “আমি তখন প্রচারণায় যুক্ত ছিলাম এবং গত সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির খুব কাছের মানুষ ছিলাম। ফলে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি কীভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো, কীভাবে একটি সিস্টেমের ভিতরে আপসের রাজনীতি চলতো। দেখেছি কীভাবে ক্ষমতাসীন দল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করত। যা ছিল সম্পূর্ণ অনৈতিক ও গণতন্ত্রবিরোধী। এই আচরণ জনগণের আস্থা ভেঙে দিয়েছে এবং দেশের ভবিষ্যতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।”
নিজের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে বাঁধন লেখেন, “এইবার আমি আন্তরিকভাবে আশা করি, সরকার নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতার পথে হাঁটবে। একটি প্রকৃত ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কেবল জনগণের দাবি নয়, বরং তা হতে পারে বাংলাদেশের মানুষের জন্য সরকারের দেওয়া সবচেয়ে বড় উপহার।”
তার বার্তার একেবারে শেষে রয়েছে একটি জোরালো ঘোষণা: “আমরা স্বচ্ছতা প্রাপ্য। আমরা জবাবদিহিতা প্রাপ্য। আমরা এমন একটি ভবিষ্যৎ প্রাপ্য, যা গঠিত হবে সত্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে—কারসাজি বা ক্ষমতার অপব্যবহার দিয়ে নয়।”
সামাজিক মাধ্যমে বাঁধনের এই বক্তব্য আলোড়ন তুলেছে। অনেকেই তার সাহস ও সততার প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, এতদিন তিনি নীরব ছিলেন কেন? তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একজন সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে তার অবস্থান গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।