ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের কোট দাজুরে শুরু হয়েছে বিশ্ববিখ্যাত কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৮ তম আসর। রেড কার্পেট, ঝলমলে তারকার উপস্থিতি, এবং বিশ্বখ্যাত নির্মাতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে ফরাসি রিভিয়েরা। তবে এবারের উৎসব শুধু চলচ্চিত্র নয়, সঙ্গে নিয়ে এসেছে তীব্র রাজনৈতিক বার্তাও।
উৎসবের উদ্বোধনী দিনেই গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং মানবিক সংকটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বরা। ৩৮০ জনের বেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলী এক খোলা চিঠির মাধ্যমে এই যুদ্ধকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে একজোট হওয়ার আহ্বান জানান। ইরানি চলচ্চিত্র নির্মাতা সেপ্টিডেহ ফার্সি বলেন, “গাজার ওপর অবরোধ ও বোমাবর্ষণের বিরুদ্ধে আমাদের স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে।” গত মাসে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি নির্মাতা ফাতিমা হাসুনার মৃত্যু উৎসবে শোকের আবহ তৈরি করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হলিউড কিংবদন্তি রবার্ট ডি নিরো। তাকে প্রদান করা হয় অনারারি Palme d’Or পুরস্কার। দীর্ঘ অভিনয়জীবনের স্বীকৃতি স্বরূপ শ্রদ্ধা জানানো হয় এই অভিনেতাকে, যিনি বহু যুগ ধরে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রকে সমৃদ্ধ করেছেন।
উৎসবের উদ্বোধনী ছবি হিসেবে দেখানো হয় অ্যামেলি বনিন পরিচালিত ‘লিভ ওয়ান ডে’। এটি একটি ডেবিউ চলচ্চিত্র, যার মাধ্যমে পরিচালক প্রথমবারেই ইতিহাস গড়েছেন—উদ্বোধনী স্লটে জায়গা করে নিয়ে। চলচ্চিত্র সমালোচকরা মনে করছেন, অ্যামেলি বনিন নতুন ধারার একটি শিল্পভাষা উপহার দিয়েছেন।
আগামী ২৪ মে পর্যন্ত চলবে এই উৎসব। প্রতিযোগিতা বিভাগে রয়েছে নানা দেশের নির্বাচিত চলচ্চিত্র, পাশাপাশি রয়েছে নারী নির্মাতাদের প্রাধান্য, পরিবেশগত সংকট নিয়ে আলোচনা, এবং রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।
এই বছর কান শুধুমাত্র চলচ্চিত্র উৎসব হিসেবে নয়, বরং একটি প্রতিবাদমঞ্চ হিসেবেও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি কেড়েছে—যেখানে চলচ্চিত্র এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা একত্রে উচ্চারিত হয়েছে।