সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল হয়ে উঠেছে মরুভূমির এক নিরীহ প্রাণী ‘সান্ডা’। বৈজ্ঞানিক নাম Uromastyx, টিকটিকি প্রজাতির এই ছোট আকৃতির মোটা দেহের সরীসৃপটি দেখতে অনেকটা গুইসাপের মতো হলেও স্বভাবে শান্ত এবং আত্মরক্ষায় এর খাঁজযুক্ত লেজ বেশ কার্যকর।
সাধারণত আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মরু অঞ্চলে বসবাসকারী এই প্রাণীকে ঘিরে এক নতুন কৌতুকধর্মী ট্রেন্ড সৃষ্টি হয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে। টিকটক, ফেসবুক ও ইউটিউব রিলে ছড়িয়ে পড়েছে অসংখ্য ভিডিও ও মিম। কেউ বলছেন, “সান্ডা না ধরলে চাকরি যাবে”, কেউ বা মজা করে বলছেন, “ভিসা পেতে হলে লাগবে সান্ডা”।
এই হাস্যরসের আড়ালে উঠে এসেছে শ্রমজীবী প্রবাসীদের কঠিন বাস্তবতা। প্রবাসে বেঁচে থাকার চাপে, মজুরি বৈষম্য ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মধ্যে এই ধরনের ট্রেন্ড যেন অপ্রত্যাশিত এক মানসিক মুক্তির উপায় হয়ে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সান্ডাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ‘সান্ডা বিরিয়ানি’, ‘সান্ডা হান্টার’, ‘সান্ডা ওম্যান’ ইত্যাদি নানা কনটেন্ট, যা একদিকে জনপ্রিয়তা পেলেও অন্যদিকে তৈরি করছে নানা বিতর্ক।
বিশেষ আলোচনায় এসেছে ‘সান্ডা তেল’, যার মাধ্যমে নাকি যৌনক্ষমতা বাড়ে- এমন দাবি রয়েছে অনেকের। তবে এর কার্যকারিতা নিয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, সান্ডা খাওয়া মাকরুহ এবং হানাফি মতে হারাম হিসেবেও বিবেচিত। অন্য মাজহাবগুলোতে কিছুটা শিথিলতা রয়েছে। Copied from: https://rtvonline.com/
বাংলাদেশে এই ট্রেন্ড নিয়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ একে নিছক বিনোদন হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ বলছেন এটি প্রবাসীদের মর্যাদাহানি করছে। কিন্তু অধিকাংশই একমত যে এই হাসির পেছনে লুকিয়ে আছে এক বেদনাদায়ক বাস্তবতা; মরুতে প্রবাসীদের ক্লান্তিকর শ্রমঘণ্টা, বৈধতার টানাপড়েন, নিঃসঙ্গতা এবং বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিনের সংগ্রাম।