হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আর কোনো ফেডারেল অনুদান বরাদ্দ দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ওপর চাপ প্রয়োগ করতে, কারণ প্রতিষ্ঠানটি সরকার ঘোষিত কয়েকটি শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
আলজাজিরা জানিয়েছে, মার্কিন শিক্ষামন্ত্রী লিন্ডা ম্যাকমাহন হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে উচ্চশিক্ষার প্রতি অবজ্ঞার অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, “আর কোনো অনুদানের আবেদন করে লাভ নেই, কিছুই দেওয়া হবে না।” অর্থাৎ, বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন থেকে সরকারি অর্থায়ন ছাড়া, সাবেক শিক্ষার্থী ও নিজেদের তহবিলের ওপর নির্ভর করেই চলবে।
এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন। আগে কখনো গবেষণা, শিক্ষা বা চিকিৎসা খাতে বরাদ্দ বিলিয়ন ডলারের অনুদান এমন কৌশলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি।
রয়টার্স জানায়, হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা বলেছে, “এই সিদ্ধান্ত উচ্চশিক্ষার ওপর অপ্রত্যাশিত ও অনুচিত হস্তক্ষেপ। এটি একটি প্রতিশোধমূলক সিদ্ধান্ত।” বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “২১ এপ্রিল হার্ভার্ড যে মামলা করেছিল, ট্রাম্প প্রশাসন তারই প্রতিশোধ নিচ্ছে।”
চিঠিতে গবেষণা ও উদ্ভাবনে অর্থায়ন বন্ধের হুমকিকে অবৈধ উল্লেখ করে হার্ভার্ড জানিয়েছে, তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে, দৃষ্টিভঙ্গির বৈচিত্র্যকে সম্মান জানাবে এবং ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে। একইসঙ্গে তারা গবেষণায় সরকারি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধেও আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে।
হার্ভার্ড ও ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধের পেছনে মূলত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গাজা যুদ্ধবিরোধী ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ। প্রশাসনের দাবি, এসব বিক্ষোভে ইহুদিবিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে, যদিও বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা কেবল ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
সম্প্রতি হোয়াইট হাউস হার্ভার্ডের ৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি ফেডারেল অনুদানের পুনর্মূল্যায়ন শুরু করেছে। শিক্ষা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ডাইভার্সিটি, ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনক্লুশন (DEI) নীতিমালা বাতিল করতে বলেছে এবং ফিলিস্তিনপন্থি গোষ্ঠী ও প্রতিবাদে মুখোশ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করায়, এবার সমস্ত সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হলো।