Ridge Bangla

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা চূড়ান্ত; ট্রাম্প কি অনুমোদন দেবেন?

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ চূড়ান্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলোতে রাশিয়ার ব্যাংক ও জ্বালানি খাতকে টার্গেট করা হয়েছে। মূল লক্ষ্য হলো ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় মস্কোর ওপর চাপ আরও বাড়ানো।

তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা এবং একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমসহ ব্যাংক ও প্রাকৃতিক সম্পদ খাতের বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর প্রভাব ফেলবে। তবে এই বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চূড়ান্ত অনুমোদন এখনও মেলেনি।

জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। কাউন্সিলের মুখপাত্র জেমস হিউইট জানান, প্রেসিডেন্ট শুরু থেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পূর্ণ যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার পক্ষে কাজ করে আসছেন।

মার্কিন অর্থ বিভাগ সাধারণত এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে থাকলেও এ বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেনি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প যদি এই নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করেন—বিশেষ করে গত সপ্তাহে ইউক্রেনের সঙ্গে খনিজ সম্পদ চুক্তি সইয়ের পর—তবে সেটি ক্রেমলিনের প্রতি তার কৌশলগত অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত হতে পারে।

২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর থেকে শুরু করে ২০২২ সালে পূর্ণমাত্রার ইউক্রেন আগ্রাসন পর্যন্ত মস্কোর ওপর একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। তবুও রাশিয়া বিভিন্ন বিকল্প পথ ব্যবহার করে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

সাবেক মার্কিন ন্যাটো দূত কার্ট ভলকার মন্তব্য করেন, “ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির প্রতিটি সুযোগ দিয়ে চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু পুতিন প্রতিবার তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার ওপর চাপ তৈরির নতুন ধাপ।”

ভলকার আরও বলেন, “রাশিয়া তেল ও গ্যাস বিক্রি করে চীন ও ভারতের কাছ থেকে বিপুল অর্থ উপার্জন করছে—যা তাদের সামরিক কার্যক্রমে সহায়তা করছে। ট্রাম্প যদি এ ক্ষেত্রে ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’ আরোপ করেন, তবে সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।”

উল্লেখ্য, সেকেন্ডারি স্যাংশন এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে লেনদেনে যুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মতো অর্থনৈতিক পরাশক্তির ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত প্রভাবশালী কৌশল।

এদিকে, ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ সম্প্রতি পুতিনের সঙ্গে চারবার বৈঠক করেছেন এবং ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল মস্কোর অধীনে ছেড়ে দেওয়ার মতো শান্তি কৌশলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু তার পরপরই রাশিয়া ইউক্রেনের শহরগুলোতে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।

ট্রাম্পের ভ্যাটিকানে জেলেনস্কির সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ’ বৈঠকের পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, রাশিয়ার ব্যাংকিং খাতসহ অন্যান্য সেক্টরে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের কথা তিনি দৃঢ়ভাবে বিবেচনা করছেন এবং এটি যুদ্ধবিরতি ও শান্তিচুক্তি না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।

আরো পড়ুন