Ridge Bangla

বিডিআর হত্যাকাণ্ড রহস্য উদঘাটন করতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রায় দেড় দশক পর আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য যেকোনো মূল্যে উদঘাটন করতে হবে। তিনি বলেন, “পুরো জাতি তদন্ত কমিশনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা সবাই উত্তর খুঁজছি। কমিশনকে এই ঘটনার তদন্তে সফল হতেই হবে।”

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে গঠিত কমিশনের সদস্যদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি।

মসৃণভাবে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডকে ‘নৃশংস’ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “তাদের নিজেদের অফিসারদেরই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।” এ ঘটনায় তদন্ত কমিশনকে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্ত কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আলম ফজলুর রহমান জানান, তদন্ত কার্যক্রম পুরোদমে চলছে এবং জুনের মধ্যে তা চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, “১৬ বছর আগের ঘটনা হওয়ায় অনেক তথ্য সংগ্রহে কিছুটা সময় লাগছে। অভিযুক্তদের অনেকেই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন, তাদের খোঁজে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে।”

কমিশন প্রধান আরও বলেন, “ডিজিকে হত্যার পর পরিকল্পিতভাবে বাকিদের হত্যা করা হয়েছে। এটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যার শেকড় বের করতে হবে। এমন ভয়াবহ ঘটনায় আজও কাউকে দায়ী করা হয়নি, সরানো হয়নি কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে। এটি গোয়েন্দা সংস্থা, সামরিক বাহিনী এবং রাজনৈতিক ব্যর্থতার উদাহরণ।”

তদন্ত কমিশনের সদস্যরা হলেন—ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান, মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, ড. এম আকবর আলী, মো. শরীফুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ খান চন্দন ও এ টি কে এম ইকবাল।

প্রসঙ্গত, ১৬ বছর পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কমিশনস অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ অনুযায়ী এ কমিশন গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিশন সম্প্রতি ১৮ জনকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডেকেছে, যার মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার উপদেষ্টা, তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তাসহ কয়েকজন সাংবাদিক। তবে তালিকাভুক্ত কিছু সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য বর্তমানে পলাতক।

পিলখানার বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দীর্ঘদিন ধরেই বিরাজ করছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করে আসছে। এই হত্যার পেছনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকারের একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অনেকে এটিকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন।

আরো পড়ুন