চট্টগ্রামের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদকে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দনভাবে পুনর্নির্মাণ করে একটি আইকনিক স্থাপনা হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে সরকারের সহযোগিতা এবং স্থানীয় মুসল্লিদের অংশগ্রহণে।
রোববার (১২ অক্টোবর) আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, “এই ঐতিহাসিক মসজিদটিকে আমরা এমনভাবে গড়ে তুলতে চাই, যাতে এটি শুধু চট্টগ্রামের নয়, সমগ্র বাংলাদেশের এক অনন্য ধর্মীয় ও স্থাপত্যিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিত হয়।”
তিনি জানান, প্রথম পর্যায়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে। পরবর্তীতে চট্টগ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মুসল্লিদের সহযোগিতায় বাকি অর্থ সংগ্রহ করে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হবে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়ারও আশ্বাস দেন উপদেষ্টা।
মসজিদের নতুন নকশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নির্মাণ শেষে এখানে একসঙ্গে ১৪ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা নামাজের জায়গা, মার্কেট, অডিটোরিয়াম, খাদেম ও মুয়াজ্জিনদের জন্য আবাসন সুবিধা—সবকিছুই থাকবে এই মসজিদ কমপ্লেক্সে।”
ড. খালিদ আরও বলেন, “এই প্রকল্পে দুটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে—একটি হলো মসজিদের কিছু জায়গা বেদখল হওয়া এবং অন্যটি হলো এটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত। অপরিকল্পিত স্থাপনার কারণে এখন এটি বাইরে থেকে ঠিকভাবে দেখা যায় না। তাই বিদ্যমান কাঠামো অক্ষুণ্ণ রেখে পুনর্নির্মাণ করতে হবে। এই মসজিদ যদি কখনো নামাজের অযোগ্যও হয়ে পড়ে, তবুও এটিকে সংরক্ষণ করতে হবে—প্রয়োজনে বাঁশ দিয়ে হলেও।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে এর মর্যাদা বজায় থাকবে এবং মসজিদের ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পাবে।
অনুষ্ঠানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আব্দুস সালাম খানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন মসজিদ মুসল্লি কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নুরুল্লাহ নুরী এবং মসজিদের খতিব আল্লামা সাইয়েদ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরী আল মাদানী।