এশিয়া কাপের নো হ্যান্ডশেক ও নো টক বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই মাঠের লড়াইয়ে ফের মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। এবারের বিতর্ক নারী বিশ্বকাপের। ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটের দ্বৈরথে রাজনৈতিক উত্তাপের প্রভাব আরও একবার স্পষ্ট হলো। সম্প্রতি ছেলেদের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাননি ভারতের খেলোয়াড়রা। সেই ঘটনার রেশ ছড়িয়ে পড়েছে নারী বিশ্বকাপেও।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে রোববার নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৫–এর গ্রুপ ম্যাচে টসের সময় এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য দেখা গেছে। ভারতীয় অধিনায়ক হারমানপ্রীত কর ও পাকিস্তান অধিনায়ক ফাতিমা সানা টসের পর একে অপরের সঙ্গে হাত মেলাননি।
নারী বিশ্বকাপের নিয়ম অনুযায়ী, ম্যাচ শুরুর আগে হ্যান্ডশেক বাধ্যতামূলক নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) জানিয়েছে, খেলোয়াড়দের আচরণ যদি খেলার চেতনার পরিপন্থী না হয়, তাহলে হ্যান্ডশেক না করায় কোনো শাস্তির বিধান নেই।
ম্যাচে অবশ্য টস জিতেছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক ফাতিমা সানা। টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। টুর্নামেন্টে ভারত তাদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান তাদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হেরেছে।
শক্তির বিচারে ম্যাচে পরিষ্কার ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নেমেছে ভারত। নারী ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে দুই দলের ১১টি সাক্ষাতের সবকটিতেই জিতেছে ভারত। তাই মাঠের লড়াইয়ে ভারতের একাধিপত্য থাকলেও, হাত না মেলানোর ঘটনাটি ম্যাচের চেয়েও বড় আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও এই ঘটনার পেছনে ভূমিকা রেখেছে। পেহালগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন ভারতীয় নিহত হওয়ার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে ওঠে। এর পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায় ভারত। তার জবাবে ‘অপারেশন বুনইয়ান উম মারসুস’ পরিচালনা করে পাকিস্তানও, যাতে ভারত ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
এর মধ্যেই পুরুষ এশিয়া কাপে তিনবার মুখোমুখি হয় দুই দেশ, প্রতিবারই ভারতীয় দল হাত মেলাতে অস্বীকৃতি জানায়। এবারের নারী বিশ্বকাপে তারই ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছে ভারত। রোববারের এই ঘটনা তাই কেবল ক্রিকেটীয় নয়, দুই দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলনও বটে।