বছরের পর বছর পাঠ্যবই মুদ্রণে প্রেস মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়েছে সরকারকে। তবে এবার সেই একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ভাঙতে সক্ষম হওয়ায় মাধ্যমিক স্তরের বই ছাপাতে সরকারের প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। গত আগস্টে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি মাধ্যমিকের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ৪ কোটি ৩২ লাখ বই ছাপানোর জন্য ৬০৩ কোটি টাকার একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়নি।
অভিযোগ ছিল, প্রেস মালিকরা সমঝোতার মাধ্যমে ৩০০ লটের এসব বইয়ের দাম ফর্মা প্রতি অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। (৮ পৃষ্ঠায় এক ফর্মা) গড় ফর্মাপ্রতি দাম ছিল ৩ টাকা ১৯ পয়সা। এরপর পুনঃদরপত্র আহ্বান করলে প্রেস মালিকরা স্বাধীনভাবে দর দেন এবং গড়ে প্রতি ফর্মার দাম প্রায় ১ টাকা কমে আসে।
এর ফলে শুধু মাধ্যমিকের বই ছাপাতেই সরকারের সাশ্রয় হচ্ছে ৪৫০ কোটি টাকা। তবে প্রাথমিক স্তরের বই এখনো সমঝোতার দামেই ছাপানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, সেখানে সঠিক প্রতিযোগিতা হলে আরও অন্তত ১০০ কোটি টাকা বাঁচানো সম্ভব হতো।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, আগামী শিক্ষাবর্ষে ৩০ কোটির বেশি বই ছাপানো হবে। যা মোট ৮২৬ লটে ভাগ করে দরপত্র দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিকের বইয়ের কাজ এখনো শুরু হয়নি তবে প্রাথমিকের বই ছাপানোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারের সক্রিয় হস্তক্ষেপে সিন্ডিকেট ভাঙায় প্রকৃত প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। ফলে শুধু ব্যয় সাশ্রয়ই নয়, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণও ভাঙবে।