Ridge Bangla

বাড়ছে মব সহিংসতা, উদ্বেগে সাধারণ মানুষ

সরকারের কড়া বার্তা ও সেনাপ্রধানের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও দেশে থামছে না মব সহিংসতা। মানবাধিকার সংগঠনগুলোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক গবেষণার তথ্য বলছে, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনয়নের ফলে ক্রমেই মব সহিংসতা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

মানবাধিকার সংগঠন আসকের তথ্যানুযায়ী, গত ১৩ মাসে গণপিটুনি ও মব সহিংসতায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২২০ জন। অন্যদিকে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধু গত ছয় মাসেই ২৩০টি ঘটনায় প্রাণ গেছে ৭৯ জনের, এ সময়ে আহত হয়েছেন আরও ২৬৫ জন।

এদিকে ভয়েস ফর রিফর্ম ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)-এর এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ এখন মব সহিংসতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। জরিপে আরও উঠে এসেছে, নারীর নিরাপত্তা, রাতে চলাচলের ঝুঁকি এবং পোশাক নিয়ে হয়রানির ফলেও জনতার একটি বড় অংশ শঙ্কিত।

সম্প্রতি কুমিল্লা, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, নাটোর, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ কিংবা চুরি-ডাকাতির সন্দেহে মাজার, দরবার ও স্কুলে হামলা-ভাঙচুর, এমনকি মৃতদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ভয়াবহ নানান ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সীমিত ভূমিকা ও ক্ষেত্রবিশেষে নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে এসব ঘটনার বিস্তার ঘটছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক মনে করেন, মব সহিংসতা কেবল বিচ্ছিন্ন অপরাধ নয়, বরং সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুর্বলতার প্রতিফলন। তাঁর মতে, রাষ্ট্র যদি কঠোর অবস্থান না নেয় তবে জনগণের আস্থা আরও কমে যাবে।

সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও স্বীকার করেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা খারাপের দিকে গেছে। তবে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, মব সহিংসতার মাধ্যমে দেশে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। অপরাধীদের শনাক্ত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। তাই এসব বিষয় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিস্তারিত তথ্যের আলোকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে: ১৮

আরো পড়ুন