Ridge Bangla

বিজিবিতে যোগ দিলেন সীমান্তে নিহত ফেলানীর ভাই

ফেলানী খাতুনের মর্মস্পর্শী মৃত্যুর ১৪ বছর পর তার ছোট ভাই অর্জন করলেন এক নতুন পরিচয়— তিনি এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্য।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের কুচবিহার সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারান কিশোরী ফেলানী খাতুন। মাত্র ১৫ বছর বয়সী এই কিশোরীর মর্মান্তিক মৃত্যু দেশ-বিদেশে তীব্র আলোড়ন তোলে। দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচারের দাবিতে লড়ে যাচ্ছিল তার পরিবার। সেই পরিবারের জন্য এবার এসেছে এক নতুন প্রাপ্তি— ফেলানীর ছোট ভাই আরফান হোসেন যোগ দিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি)।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) আয়োজিত নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন আরফান। পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে নিয়োগপত্র তুলে দেন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগ দেবেন।

নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে আবেগঘন কণ্ঠে আরফান বলেন, “বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল আমি দেশের জন্য কাজ করবো। ফেলানী হত্যার পর মানুষের প্রতিবাদ আর ভালোবাসা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে বিজিবিতে যোগ দিতে। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। দেশের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য বিজিবিকে আন্তরিক ধন্যবাদ।”

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, “ভারত থেকে ফেরার পথে আমার মেয়েকে নির্মমভাবে গুলি করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রেখেছিল বিএসএফ। সেই দৃশ্য এখনও ভুলতে পারি না। তবে দেশবাসী এবং বিজিবি আমাদের সবসময় পাশে ছিল। দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহে সাহায্য করেছে। আজ আমার ছেলে নিজের যোগ্যতায় বিজিবিতে চাকরি পেয়েছে— এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ।”

লালমনিরহাট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, “বিজিবি সবসময় ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। তার ছোট ভাই নিজ যোগ্যতায় উত্তীর্ণ হয়ে আমাদের গর্বিত করেছে। আমরা আশা করি, তিনি দক্ষ সদস্য হিসেবে দেশের সেবায় নিয়োজিত হবেন।”

তিনি আরও বলেন, সীমান্তে যেন আর কখনো ফেলানী হত্যার মতো মর্মান্তিক ও নৃশংস ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে: ১৬

আরো পড়ুন