ভালোবাসা থেমে থাকে না কোনো প্রতিকূলতায়। ভালোবাসার সামনে কোন প্রতিবন্ধকতাই বাঁধার দেয়াল হয়ে দাঁড়াতে পারে না, আরও একবার তারই প্রমাণ দিলেন মানিকগঞ্জের আনন্দ সাহা ও অমরিতা সরকার। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের শয্যায় থাকা অবস্থাতেই সম্পন্ন হলো তাঁদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
গত ৭ আগস্ট রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে মানিকগঞ্জে ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন আনন্দ। তাঁর দুই হাত ও একটি পা ভেঙে যায়, কোমরেও আঘাত পান। দীর্ঘ চিকিৎসার পরও তিনি এখনো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে অক্ষম।
বর্তমানে মানিকগঞ্জ শহরের আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। প্রিয়জনের এমন পরিস্থিতিতে পাশে দাঁড়াতে দ্বিধা করেননি অমরিতা। দুই পরিবারের পরামর্শে নির্ধারিত ডিসেম্বরের পরিবর্তে এগিয়ে আনা হয় তাদের দুজনের পূর্বপরিকল্পিত বিয়ের দিনক্ষণ।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে হাসপাতালের হলরুমে সীমিত পরিসরে ধর্মীয় আচার অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয় বিয়ে। এ সময় স্বজনদের উপস্থিতিতে শয্যায় শুয়ে থেকেই কনের সিঁথিতে সিঁদুর পরান আনন্দ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রোগীর নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করেই আয়োজন করা হয়। এতে অন্য রোগীদের চিকিৎসায় কোনো প্রভাব পড়েনি।
আনন্দ সাহা মানিকগঞ্জ শহরের চান মিয়া লেন এলাকার বাসিন্দা এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী অরবিন্দ সাহার ছেলে। নববধূ অমরিতা সরকার ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী গ্রামের মেয়ে এবং বর্তমানে শহরের একটি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। পরিবারের সদস্যরা জানান, দুর্ঘটনার কারণে বড় আয়োজন আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এখন তাঁদের একমাত্র অগ্রাধিকার আনন্দের চিকিৎসা ও সুস্থতা।