যার সুরে ভেসে ওঠে আত্মার ভাষা, যার সংগীত ছুঁয়ে যায় সময়ের সীমা সেই এ আর রহমান এবার খ্যাতির আলো থেকে একটু সরে এসে ভাগ করে নিলেন জীবনের এক অন্তরঙ্গ অধ্যায়। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, দীর্ঘ বছরের নিরলস পরিশ্রমের পর এখন কর্মজীবনের গতি অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন। পরিবার, আত্মিক শান্তি এবং নিজস্ব বিকাশকে অগ্রাধিকার দিতে শুরু করেছেন তিনি।
এ আর রহমান বলেন, “অনেক সময় সব পরিকল্পনা করলেও তা বাতিল হয়ে যায়। কখনও সব কিছু আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আমি জলের মতো—প্রবাহিত, নমনীয়, নিঃশব্দ। যে পাত্রে রাখা হয়, তারই আকার ধারণ করি। কাজও আসে নিজের ছন্দে, নিজের নিয়মে। সময়চক্রে আমার জন্য আলাদা এক পথ থাকে—যেখানে ধৈর্যই আমার দিশা, আর বিশ্বাসই আমার গতি।”
সাফল্যের শিখরে থেকেও এই অস্কারজয়ী সুরকার স্বীকার করেন, কর্মজীবনের শুরুতে কাজের পেছনে ছুটতে জীবনের মূল্যবান অনুভূতি হারিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আগে আমি যেন এক উন্মাদ ছিলাম, দিন-রাত কাজ করতাম। অতিরিক্ত কাজ করলে জীবনের আসল স্বাদ মিস হয়ে যায়।”
এখন তিনি ছুটে চলা থামিয়ে দিয়েছেন। নিজেকে সময় দিচ্ছেন নতুন কিছু শেখার, অনুভব করার এবং পরিবারের সঙ্গে জীবন উপভোগ করার জন্য। খ্যাতি, সুর ও সাফল্যের বাইরেও তিনি খুঁজে পেয়েছেন জীবনের আসল অর্থ—সম্পর্ক, সংবেদন ও আত্মিক শান্তি।
১৯৯৫ সালে সায়রা বানুকে বিয়ে করা এ আর রহমানের তিন সন্তানের মধ্যে—খাতিজা, রহিমা ও এ আর আমিন। দাম্পত্য জীবনের এই স্থায়িত্ব এবং গভীরতা তার জীবনের সেই অদৃশ্য সুর, যা মঞ্চে বাজে না, তবে হৃদয়ে অনুরণিত হয়।