সামাজিক ও আচরণগত পরিবর্তনের (এসবিসি) সঙ্গে উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ (সিফোরডি) ধারণা অন্তর্ভুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম হালনাগাদ করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
কমিউনিকেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (সিফোরডি) বিষয়ে প্রণীত পাঠ্যক্রম পর্যালোচনা এবং এতে সমাজের সব জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করার বিষয়ে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এ পরামর্শ দেন।
রবিবার (৩১ আগস্ট ২০২৫) থেকে রাজেন্দ্রপুরে ব্রাক সিডিএম-এ ইউজিসি ও ইউনিসেফ যৌথভাবে দুই দিনব্যাপী এ কর্মশালা আয়োজন করেছে।
ইউজিসি’র আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) জেসমিন পারভীনের সভাপতিত্বে কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. সরকার বারবাক কারমাল, ইউনিসেফের এসবিসি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. বদরুল হাসান এসবিসি ও এ সংক্রান্ত পাঠ্যক্রম প্রণয়ন বিষয়ে বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর আনোয়ার হোসেন বলেন, সামাজিক ও আচরণগত পরিবর্তনে সৃষ্ট সমস্যাগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরা এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় নিয়ে আসা জরুরি। সমাজে ব্যক্তির অবস্থান জানা, তাদের চাহিদা যাচাই-বাছাই করা, বিভিন্ন কার্যক্রমে কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে এসবিসি ও সিফোরডি সহায়তা করবে বলে তিনি মনে করেন।
প্রফেসর মাছুমা হাবিব বলেন, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে সিফোরডি’র ওপর তৈরি পাঠ্যক্রম পড়ানো হচ্ছে। চলতি উদ্যোগের মাধ্যমে এই পাঠ্যক্রমে কোন ধরণের সীমাবদ্ধতা রয়েছে কিনা তা চিহ্নিতকরণ এবং সিফোরডি ও এসবিসি বিষয়ে শিক্ষণে শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত একটি মডেল নির্ধারণ করা হবে।
ইউজিসির উপপরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস এবং খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ শিক্ষক ও গবেষকগণ অংশ নেন।
এছাড়া আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক খন্দকার সাবাহাত রিজভীসহ ইউজিসি ও ইউনিসেফের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ইউনিসেফের সহযোগিতায় ইউজিসি বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে “উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ” (Communication for Development – C4D) বিষয়টি পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেয় এবং ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অংশগ্রহণে একটি পাঠ্যক্রম প্রণয়ন কর্মশালার আয়োজন করে। ইউনিসেফ এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছে। গত কয়েক বছরে বিশ্বব্যাপী সিফোরডি বিষয়ে কিছু মৌলিক ধারণাগত পরিবর্তন এসেছে এবং এ সংক্রান্ত পঠন-পাঠন-প্রয়োগকে সার্বিকভাবে “সামাজিক ও আচরণগত পরিবর্তন” (এসবিসি) হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। বৈশ্বিক প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সিফোরডি বিষয়ে প্রণীত পাঠ্যক্রম পর্যালোচনা এবং নতুন ধারণাগত ও প্রায়োগিক বিষয়গুলো এতে অন্তর্ভুক্ত করাই এবারের কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।