Ridge Bangla

তিস্তার বন্যায় কৃষকের স্বপ্ন ভেসে গেছে অনিশ্চয়তার জলে

তিস্তা নদীর প্রবল স্রোতে হাজারো কৃষকের ফসল ও স্বপ্ন তলিয়ে গেছে। মাত্র দুদিন আগে সবুজে ঘেরা ধানের ক্ষেত আজ শুধু কাদা, পলি ও বালুর স্তরে ঢেকে গেছে। নদীর পানি কমলেও জমিতে সৃষ্ট ক্ষতচিহ্নের প্রভাব এখনও দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে তিস্তার চর ও নিম্নাঞ্চল যেন এক বিশাল বালুরাজ্যে পরিণত হয়েছে। অনেক কৃষক বাঁশ পুঁতে ছোট বাঁধ বানিয়ে জমি বাঁচানোর চেষ্টা করছেন, তবে চোখেমুখে এখন শুধু হতাশা, বেঁচে থাকার লড়াই এবং অনিশ্চয়তার ছাপ।

খালিশা চাপানি ইউনিয়নের কৃষক হাসেম আলী পাঁচ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করেছিলেন। তিনি বলেন, “চারা কিনতে ধার নিয়েছি, কিন্তু সব শেষ হয়ে গেছে। জমি কাদামাটিতে ঢেকে গেছে, সংসার কীভাবে চলবে, আল্লাহই জানেন।” জালাল উদ্দিনও জানিয়েছেন, তার জমি ৯ দিন পানির নিচে ছিল, ধানের পাতা হলুদ হয়ে শুকিয়ে গেছে এবং কিছু পচে নষ্ট হয়েছে। এবারের বন্যায় উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশ রোপা আমন ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী ৫৪৩ একর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি।

খালিশা চাপানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান বলেন, “প্রতি বছরই কৃষকরা একই ধরনের ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, স্থায়ী বাঁধ ও আধুনিক সেচব্যবস্থা জরুরি।” ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না জানান, জমিতে এখনও কাদা, বালি ও পলির স্তর রয়েছে। বন্যা-পরবর্তী করণীয় কৃষকদের জানানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরানুজ্জামান বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য সরকারি প্রণোদনা ও পুনর্বাসনসহ সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে:

আরো পড়ুন