ময়মনসিংহ নগরীর মৃত্যুঞ্জয় স্কুল এলাকায় প্রায় ৪২৬ বছর আগের একটি প্রাচীন মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, যন্ত্রটি ১৬৯৯ সালে নির্মিত। বর্তমানে এটি রাস্তার পাশে অবহেলায় পড়ে আছে। সম্প্রতি পুরাকীর্তি সুরক্ষা কমিটি, ময়মনসিংহ অঞ্চলের একটি প্রতিনিধি দল যন্ত্রটি পরিদর্শন করে দ্রুত সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে।
বিশ্ব ইতিহাসে মুদ্রণশিল্পের সূচনা হয় ১৫ শতকের মাঝামাঝি সময়ে। ১৪৫০ সালে জার্মান উদ্ভাবক জোহানেস গুটেনবার্গ ধাতব চলনশীল অক্ষর ব্যবহার করে আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র তৈরি করেন। ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয় ১৫৫৬ সালে, গোয়ায় পর্তুগিজদের উদ্যোগে। ধীরে ধীরে এ প্রযুক্তির প্রভাব পড়ে বাংলাতেও, যার ছাপ মেলে ময়মনসিংহ অঞ্চলে।
কিন্তু মূল্যবান এ পুরাকীর্তিটি বর্তমানে চরম অবহেলায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যন্ত্রটির বহু অংশ ইতোমধ্যেই চুরি হয়ে গেছে, বিশেষ করে মাদকসেবীদের হাতে। কে বা কারা এটি ফেলে রেখেছে, সে সম্পর্কেও নিশ্চিত তথ্য মেলেনি।
পুরাকীর্তি সুরক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “যদি এই মুদ্রণযন্ত্রটি সংরক্ষণ করে প্রদর্শন করা যেত, নতুন প্রজন্ম জানতে পারত মুদ্রণ শিল্পের ইতিহাস ও ঐতিহ্য।”
অন্যদিকে কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক স্বপন ধর জানান, “এভাবে অবহেলায় থাকলে ভবিষ্যতে কিছুই টিকবে না। ময়মনসিংহে বহু পুরাকীর্তি অবহেলায় ধ্বংসের পথে।” প্রতিনিধি দল প্রাচীন এই মুদ্রণযন্ত্রসহ অন্যান্য ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষণের জন্য প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে জাদুঘরে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছে।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক স্বপন ধর, আব্দুল কাদের চৌধুরী, কবি সরকার আজিজ, গোলাম ফারুক লিটন, নুর আলী চিশতি, কবি আফতাব আহমেদ মাহবুব, সাংবাদিক শফিয়েল আলম সুমনসহ স্থানীয় বহু গণ্যমান্য ব্যক্তি।