যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় ১৫ আগস্ট ইউক্রেন ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক ফলপ্রসূ না হলেও নতুন করে নানা অবিশ্বাসের জন্ম দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ইউক্রেনকে বাদ রেখে কোনো সমাধান মেনে নেওয়া হবে না। এর প্রেক্ষিতেই সোমবার (১৮ আগস্ট) ট্রাম্পের আমন্ত্রণে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফিনল্যান্ড, ইতালি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ হোয়াইট হাউসে বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক শেষে নেতারা নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন।
ইউক্রেন: প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বৈঠককে এ পর্যন্ত সবচেয়ে ইতিবাচক আলোচনা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য প্রস্তুত।
যুক্তরাজ্য: প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বৈঠকের ফল নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, নেতাদের মধ্যে বাস্তব ঐক্য প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, “ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে ইউক্রেন সম্পর্কিত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।”
জার্মানি: চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস ট্রাম্পকে রাশিয়ার ওপর যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “পরবর্তী বৈঠক যুদ্ধবিরতি ছাড়া হতে পারে—এটা আমি কল্পনাই করতে পারি না।” তিনি আরও জানান, পুতিন আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলেনস্কির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সম্মত হয়েছেন।
ফ্রান্স: প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করেন এবং বলেন, ইউরোপীয় সামরিক বাহিনীকে ইউক্রেনকে সহায়তা করতে মাঠে সৈন্য পাঠানো উচিত।
ফিনল্যান্ড: প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টুব সতর্ক মন্তব্য করে জানান, ইউক্রেনের জন্য মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এখনো স্পষ্ট নয়। পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, রুশ নেতা বিশ্বাসযোগ্য নন।
ইতালি: প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, “কীভাবে নিশ্চিত করা যায় যে এটি আবার ঘটবে না—এটাই যেকোনো শান্তি প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত।”
ইউরোপীয় কমিশন: প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েন রাশিয়ার হাতে আটক ইউক্রেনীয় শিশুদের ফেরত দেওয়ার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “এই যুদ্ধের মানবিক মূল্য বন্ধ হওয়া উচিত।”
ন্যাটো: মহাসচিব মার্ক রুটে ট্রাম্পকে “বাস্তববাদী শান্তি-সন্ধানী” হিসেবে আখ্যায়িত করে জানান, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে কাজ শুরু হবে।