Ridge Bangla

ঢাকায় ছিনতাইকারীদের জামিনে মুক্তি, জনমনে উদ্বেগ

ছিনতাইকারী

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পথচারী, চাকরিজীবী কিংবা সাধারণ মানুষের জন্য ছিনতাই এখনো বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যা, রাত ও ভোরে এ ধরনের অপরাধের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে লুটপাট ও হত্যার ঘটনাসহ ছিনতাইয়ের নানা ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় জনমনে আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাসে (মে-জুলাই) ঢাকার বিভিন্ন থানার ছিনতাই মামলার ১ হাজার ১০৮ আসামি আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। মে মাসে ৪২৫ জন, জুনে ৩০৫ জন এবং জুলাইয়ে ৩৭৮ জন জামিন পান। এদের মধ্যে অনেকে এজাহারভুক্ত ও অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিও ছিলেন।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক পরিশ্রম করে আসামি গ্রেপ্তার করা হলেও আইনি জটিলতা, দীর্ঘসূত্রিতা ও পর্যাপ্ত সাক্ষ্যের অভাবে অল্প সময়ের মধ্যে অনেকেই আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে জামিনে বেরিয়ে আবারও একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। এতে একই অপরাধীর বিরুদ্ধে বারবার অভিযান চালাতে হচ্ছে।

আইনজীবীদের মতে, মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামিন আটকানো কঠিন। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই জামিনকে নাগরিক অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পুলিশি তদন্ত, প্রসিকিউশন ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের কার্যকর ভূমিকা জরুরি।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জানান, হাতেনাতে ধরা বা পুরোনো মামলার আসামিরা সাধারণত জামিন পান না। তবে সন্দেহভাজনদের দীর্ঘদিন আটক রাখা সম্ভব নয়, তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কয়েক মাস পর জামিন মেলে।

পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেন, অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতে পুলিশের পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে। তবে আদালতে সঠিকভাবে মামলা পরিচালনা ও শক্তিশালী যুক্তি-প্রমাণ উপস্থাপন করাই বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, সঠিক ধারায় মামলা ও দ্রুত অভিযোগপত্র দাখিল করলে ছিনতাইকারীদের সাজা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। অন্যথায় তারা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও অপরাধে জড়িয়ে পড়বে, আর এতে নগরবাসীর নিরাপত্তাহীনতা আরও বাড়বে।

আরো পড়ুন