চুয়াডাঙ্গা জেলায় টানা অতিবৃষ্টির কারণে ৮৭২ হেক্টর জমির ফসল ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। জেলার পাঁচটি থানার নিচু এলাকায় সবজি, আউশ ও আমন ধান, পাট, কলা, পেঁপে ও বিভিন্ন ফলন ঝরে পড়েছে। বিশেষ করে কাঁচামরিচ, ধনেপাতা, বেগুন, লাউ, শসা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি শীতকালীন সবজির বীজতলাও ক্ষতির কবলে পড়েছে।
সদর উপজেলার সরাববাড়িয়া গ্রামের কৃষক কামরুল হাসান বলেন, “টানা বৃষ্টির কারণে আমন ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছি না। পেঁপে, লাউ, শসা ও ধনেপাতা ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাজারে সবজির দাম দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।” একই গ্রামের কৃষক আসাদ জানান, তার তিন বিঘা জমির কাঁচামরিচ নষ্ট হয়ে গেছে এবং ঝড়ে পেঁপে বাগানের অনেক গাছ উপড়ে পড়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্যে রয়েছে ৪২ হেক্টর জমির আমন ধানের বীজতলা, ৯৮ হেক্টর আমন আবাদ, ১৩২ হেক্টর আউশ ধান, ১১০ হেক্টর মরিচ, ৩১২ হেক্টর সবজি, ৫৭ হেক্টর কলা, ৩৭ হেক্টর পেঁপে, ১৩ হেক্টর চিনাবাদাম, ২০ হেক্টর পেয়ারা, ২১ হেক্টর মাল্টা ও ৩০ হেক্টর ড্রাগন ফল। তবে কৃষকের তথ্য অনুযায়ী পাট ও পানেও ক্ষতি হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, গত জুলাইয়ে গত বছরের তুলনায় প্রায় পাঁচগুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। জুলাইয়ে ৪৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত বছরের ৮৫ মিলিমিটারের তুলনায় অনেক বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, “আমনের জমির পানি সরে গেছে। কৃষকদের নতুন করে চারা রোপণ এবং প্রয়োজনে নাবি জাতের চারা ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অন্য ফসলের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
অতিবৃষ্টির কারণে চুয়াডাঙ্গার কৃষি সেক্টর বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং কৃষকরা দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।