Ridge Bangla

চাকরির স্বপ্নে বিদেশ গিয়ে না খেয়ে মৃত্যুবরণ গাইবান্ধার যুবকের

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের কামারদহ ইউনিয়নের রসুলপুর বালুপাড়া গ্রামের প্রবাসী সাফিউল ইসলামের মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েছে তার পরিবার ও গ্রামবাসী। হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণবন্ত এ তরুণের অকাল মৃত্যুতে গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

দিনমজুর বাবার ছেলে সাফিউল পরিবারের সচ্ছলতার স্বপ্নে গত বছরের ১ মে দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব যান। এজন্য তিনি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ এবং স্থানীয়ভাবে আরও ১ লাখ টাকা সুদের ওপর সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সেখানে কোনো চাকরি জোটেনি। দীর্ঘ ১৫ মাস বিভিন্ন স্থানে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে মসজিদে মসজিদে খাবার চেয়ে, কখনো রাস্তায়, কখনো ফ্লাইওভারের নিচে দিন কাটান তিনি। এতে অসুস্থ হয়ে ২৮ জুলাই সৌদি আরবের একটি হাসপাতালের গেটে খাবার ও চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মরদেহ দেশে আনার অনিশ্চয়তায় মা মোছা. মহিলা বেগম ও বাবা মো. জলিল শেখ বারবার অচেতন হয়ে পড়ছেন। পরিবারের শোকের পাশাপাশি ঋণের বোঝা তাদের নিঃস্ব করে দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, একই গ্রামের প্রবাস ফেরত মিস্টারের মাধ্যমে সাফিউল ও রনি নামের আরেক যুবক সৌদি গিয়েছিলেন। চাকরি না পেয়ে খাদ্যাভাবে সাফিউল মারা গেলেও রনি এখনো মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। মিস্টারের কাছে বারবার সহযোগিতা চাইলে উল্টো হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

গাইবান্ধা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মো. নেশারুল হক জানিয়েছেন, সাফিউলের মরদেহ দ্রুত দেশে আনার জন্য সরকারি সহযোগিতা দেওয়া হবে। তিনি দালালের মাধ্যমে বিদেশযাত্রা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট সাফিউলের মৃত্যু গ্রামবাসীকে গভীর শোকে আচ্ছন্ন করেছে। স্থানীয়দের দাবি, দালালের প্রতারণায় এভাবে আর যেন কোনো তরুণের জীবন নিভে না যায়, সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

আরো পড়ুন