মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে ইউক্রেনের মানচিত্রে বলপূর্বক মৌলিক পরিবর্তনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের বিশাল অংশের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে আসছে রাশিয়া। সে সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন ক্রিমিয়া উপদ্বীপ রক্তপাতহীনভাবে দখল করে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেন। এরপর দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু হয়। দীর্ঘ আট বছরের সংঘাতে প্রায় ১৪ হাজার মানুষ নিহত হন। অবশেষে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিন পূর্ণাঙ্গ আক্রমণ চালান এবং ইউক্রেনের বড় একটি অংশ দখল করেন। তবে বর্তমানে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড রয়েছে, যা আগে ছিল ২৭ শতাংশ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এখন একটি নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। ইউরোপীয় মিত্ররাও একই দাবি তুলছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি শান্তিপূর্ণ সমাধান চাইছেন। তবে আলাস্কা সম্মেলনের আগে ইউক্রেনের ভূমি বিনিময়ের প্রসঙ্গ তোলায় কিয়েভ ও ইউরোপে বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাম্প কোন অঞ্চলের কথা বলেছেন তা এখনো পরিষ্কার নয়।
রাশিয়া দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের পুরো নিয়ন্ত্রণ চাইবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমনকি ক্রামাটোরস্ক ও স্লোভিয়ানস্কের মতো শহরও তারা দখলে নিতে চাইতে পারে। কিন্তু এসব এলাকায় বহু ইউক্রেনীয় সেনা প্রাণ দিয়েছেন, তাই কিয়েভের পক্ষে ছাড় দেওয়া কঠিন। জেলেনস্কি ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন, দনবাস ছাড়বেন না।
আজকের আলাস্কা বৈঠকে ট্রাম্প ও পুতিন প্রথমে একান্ত বৈঠকে মিলিত হবেন, এরপর দ্বিপক্ষীয় মধ্যাহ্নভোজ ও সংবাদ সম্মেলন হবে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের সব ধরনের সম্ভাবনা বিবেচনা করবেন ট্রাম্প। অন্যদিকে পুতিনও এ প্রচেষ্টাকে ‘আন্তরিক’ বলে বর্ণনা করেছেন।
বৈঠককে সামনে রেখে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউরোপ সফরে রয়েছেন। তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও জার্মানির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। স্টারমার বলেছেন, আলাস্কা সম্মেলনে পুতিনকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে, তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক।