রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ ঘিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ এবং রংপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় একজন ভুক্তভোগীর করা মামলায় অজ্ঞাতনামা এক থেকে দেড় হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার প্রেক্ষিতে যৌথ অভিযানে এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, আলদাদপুর বালাপাড়া একটি হিন্দু-অধ্যুষিত গ্রাম, যা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত। গত শনিবার (২৬ জুলাই) এই গ্রামের এক কিশোর ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর ছবি ও মন্তব্য পোস্ট করেছে—এমন অভিযোগ ওঠে।
অভিযোগের পরপরই পুলিশ কিশোরটিকে আটক করে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে এবং আদালতের মাধ্যমে একটি শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠায়।
কিশোরকে আটকের পর ওই রাতেই উত্তেজিত জনতা দুই দফায় মিছিল করে তার পরিবারের বাড়ি ও আত্মীয়দের ঘরে হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে যায়।
রবিবার বিকেলেও উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেদিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আবারও হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশের বাধা দেওয়ার চেষ্টার সময় এক কনস্টেবল গুরুতর আহত হন এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রশাসনের হিসেবে, এই সহিংসতায় ১৫টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছে। হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে শ্রী রবীন্দ্রনাথ রায় নামের একজন গঙ্গাচড়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকাজুড়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।