Ridge Bangla

রাশিয়ার কর্মকাণ্ডকে ‘জঘন্য’ ও বিরক্তিকর বললেন ট্রাম্প

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী হামলার পর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার যুদ্ধনীতি নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছেন। একে তিনি ‘জঘন্য’ ও ‘বিরক্তিকর’ বলে অভিহিত করেন এবং মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারিও দেন। পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মস্কোয় ‘শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন’-এর আহ্বান জানিয়েছেন।

ট্রাম্প বলেন, “আমরা কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছি।” মস্কোকে তিনি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধ বন্ধের আলটিমেটাম দিয়েছেন। তা না হলে আরও কঠিন অর্থনৈতিক শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলেও সতর্ক করেন।

সিএনএনের বরাতে জানা যায়, কিয়েভে রুশ হামলায় এখন পর্যন্ত ৩১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত পাঁচটি শিশু রয়েছে। মাত্র দুই বছর বয়সী একটি শিশুও ছিল হতাহতদের মধ্যে। একটি ৯ তলা আবাসিক ভবনের একাংশ ধসে পড়ায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫৯ জন। চলতি বছরে কিয়েভে রাশিয়ার এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।

জুলাই মাসজুড়ে এমন হামলার ঢেউ আছড়ে পড়েছে ইউক্রেনে। কিয়েভের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসেই রাশিয়া ইউক্রেনে ৩,৮০০টির বেশি ড্রোন ও ২৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যার মধ্যে ১২৮টি ছিল ব্যালিস্টিক মিসাইল।

ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং ইতালির নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর ইউক্রেন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র শিগগিরই রাশিয়ার জ্বালানি খাতের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা এবং ‘সেকেন্ডারি ট্যারিফ’ আরোপ করতে পারে।

আলজাজিরা জানায়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, “এই নৃশংস হামলা আবারও প্রমাণ করেছে যে রাশিয়ার ওপর আরও চাপ প্রয়োজন। যুদ্ধের সক্ষমতা ধরে রাখতে যে উপকরণগুলোর ওপর রাশিয়া নির্ভর করছে, সেগুলোর সবকটিকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “রাশিয়ায় সরকার পরিবর্তন না হলে, এই যুদ্ধ শেষ হলেও মস্কো আশপাশের দেশগুলোকে অস্থিতিশীল করতে থাকবে।”

এদিকে ইউক্রেনকে আরও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জার্মানি। তারা জানায়, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ইউক্রেনে দুটি প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঠানো হবে। দ্বিতীয় ধাপে আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে আরও সামরিক সহায়তা পাঠানো হবে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা আন্দ্রে ইয়ারমাক জানিয়েছেন, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো মিলে ইউক্রেনের জন্য একটি নিরাপত্তা চুক্তির খসড়া প্রস্তুত করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও রাশিয়ার সাম্প্রতিক হামলাকে ‘পাশবিক’ বলে নিন্দা জানিয়েছে এবং ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শান্তি আলোচনার অচলাবস্থার পর রাশিয়া আকাশপথে হামলা আরও জোরদার করেছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ায় বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এটি একটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ হলেও এর মূল উদ্দেশ্য হলো রাশিয়ার ওপর চাপ অব্যাহত রাখা।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে:

আরো পড়ুন