সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে অনলাইন জুয়ার প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। বিশেষ করে আইপিএল ও বিপিএল চলাকালে এর বিস্তার বহুগুণে বাড়ে। দেশে জুয়া খেলা এবং তার প্রচার আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ হলেও শোবিজ এবং ক্রীড়াঙ্গনের বেশ কয়েকজন শীর্ষ তারকাকে অর্থের বিনিময়ে এসব অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে।
আইন পেশায় জড়িত এবং জনপ্রিয় মডেল পিয়া জান্নাতুল গত ১ জানুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অনলাইন জুয়ার অন্তত ১২টি বিজ্ঞাপন পোস্ট করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘বাবু ৮৮’ এবং ‘ভাগ্য’ নামের প্রতিষ্ঠান। তারকাদের মধ্যে আরও আছেন চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী, অভিনয়শিল্পী সামিরা খান মাহি এবং জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, যারা অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারে অংশ নিয়েছেন।
বিশ্বের জনপ্রিয় টি-টোয়েন্টি লিগ আইপিএল ঘিরে বাংলাদেশে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন বিপুলভাবে প্রচারিত হচ্ছে। যদিও এবারের আসরে কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটার অংশ নিচ্ছেন না, তবুও প্রচারণা থেমে নেই। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও গুগলের মতো সামাজিক ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন চলছে অনায়াসেই।
টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে সাইবার স্পেসে পরিচালিত যেকোনো ধরনের জুয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এই অধ্যাদেশ উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন পেলে, এসব অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার সুযোগ তৈরি হবে।
তবে এখনো পর্যন্ত দেশের শীর্ষ তারকারা এই প্রচারণায় জড়িত থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিশিষ্ট তারকাদের মধ্যে আরও আছেন নুসরাত ফারিয়া, অপু বিশ্বাস, মাহিয়া মাহি প্রমুখ, যারা বিভিন্ন সময়ে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করেছেন। চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী ‘মেগা ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড’ নামের প্রতিষ্ঠানের তিনটি বিজ্ঞাপন এবং সামিরা খান মাহি ‘বাবু ৮৮’ নামের দুটি বিজ্ঞাপন প্রচার করেছেন।
ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান তার ১ কোটি ৬০ লাখ অনুসারী থাকা ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ২২ মার্চ ‘ওয়ানএক্সবেট’ নামের একটি অনলাইন জুয়ার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রচার করেছেন। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমালোচিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এই প্রবণতা রোধে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলছেন সামাজিক ও আইনি বিশ্লেষকরা।