চুল মানুষের সৌন্দর্যের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এই সৌন্দর্য রক্ষায় আমরা নানা ধরনের প্রসাধনী ও পণ্য ব্যবহার করি—শ্যাম্পু, তেল, মাস্ক থেকে শুরু করে নানা হেয়ার ট্রিটমেন্ট। কিন্তু চুলের প্রকৃত যত্ন মূলত শুরু হয় ভেতর থেকে, অর্থাৎ খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে। অনিয়মিত জীবনযাপন, প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব, ভুল পণ্যের ব্যবহার কিংবা বায়োটিনের ঘাটতির কারণে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পড়তে শুরু করে।
বায়োটিন, যাকে ভিটামিন বি৭ বলা হয়, চুল, ত্বক ও নখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে অত্যন্ত কার্যকর। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে, চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। নিচে চুলের যত্নে কার্যকর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাবারের তালিকা দেওয়া হলো।
বাদাম ও আখরোট: এই খাবারগুলোতে রয়েছে প্রচুর বায়োটিন, ভিটামিন-ই এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। প্রতিদিন ৫-৬টি ভেজানো বাদাম ও ২-৩টি আখরোট খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে ও চুল পড়া রোধ করে।
ডিম: ডিমের কুসুমে রয়েছে উচ্চমাত্রার বায়োটিন, প্রোটিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড। এগুলো চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলের পুনর্গঠনে কার্যকর। প্রতিদিন ১-২টি সিদ্ধ ডিম অথবা অমলেট খাওয়া যেতে পারে।
অ্যাভোকাডো: এই সুপারফুডটি চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং চুলে প্রাকৃতিক ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনে। এতে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি, বায়োটিন ও ভিটামিন-ই মাথার ত্বক সুস্থ রাখে ও চুল পড়া প্রতিরোধ করে।
সূর্যমুখী বীজ: সূর্যমুখী বীজে রয়েছে বায়োটিন, জিঙ্ক ও ভিটামিন বি৬। এগুলো চুলের গোড়া শক্ত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১-২ টেবিল চামচ বীজ সালাদ বা সকালের নাশতায় খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
মিষ্টি আলু: মিষ্টি আলুতে রয়েছে বায়োটিন, বিটা-ক্যারোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা চুল পড়া রোধ করে এবং চুলের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক। এটি সিদ্ধ, ভাজা বা চাট হিসেবে খাওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞ পরামর্শ: চুলের যত্নে বাহ্যিক যত্নের পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় এসব উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, ভেতর থেকে যত্ন না নিলে বাইরের যত্নে দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাওয়া কঠিন।