মোসাম্মাত সাগরিকা ফিরলেন এবং রাজকীয়ভাবেই ফিরলেন! নিষেধাজ্ঞার কারণে আগের তিন ম্যাচে না খেললেও, সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ‘অঘোষিত ফাইনালে’ সোমবার নেপালের বিপক্ষে একাই চার গোল করে বাংলাদেশকে এনে দিলেন টানা দ্বিতীয় শিরোপা। রাজধানীর বসুন্ধরার কিংস অ্যারেনায় ৪-০ গোলের দাপুটে জয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো স্বাগতিকরা।
ড্র করলেই শিরোপা নিশ্চিত ছিল বাংলাদেশের। তবে সাগরিকার গোল বন্যায় কোনো জায়গা রাখেনি নেপালের প্রত্যাঘাতের। গোলের সপ্তম মিনিটে শুরু করে ৫১, ৫৮ এবং ৭৭ মিনিটে আরও তিনটি গোল করে ম্যাচ ও শিরোপা একাই নিশ্চিত করে ফেলেন তিনি।
খেলার শুরুতে পূজা দাস ও স্বপ্না রানীর দুর্দান্ত সমন্বয়ে ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন সাগরিকা। দ্বিতীয়ার্ধে উমেলা মারমার পাস থেকে ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে দ্বিতীয় গোল করেন। এরপর জয়নব বিবির লম্বা পাস থেকে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন এবং শেষ গোলটি করেন ডানপ্রান্ত থেকে একক প্রচেষ্টায়। একটি অফসাইডের সিদ্ধান্তে বঞ্চিত হন সম্ভাব্য পঞ্চম গোল থেকে।
ম্যাচের পরেই বিজয়ের উল্লাসে ভাসে পুরো মাঠ। ডাগআউট থেকে দৌড়ে এসে সাগরিকাকে জড়িয়ে ধরেন বেঞ্চে থাকা সতীর্থরা। দর্শকেরা স্মোক ফ্লেয়ার হাতে নিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন। ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারকে কাঁধে তুলে নেন খেলোয়াড়েরা।
তবে উল্লাসের মাঝেও ছিল বিষাদের ছায়া। আগের দিন উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২৭ জন নিহত হন, যার মধ্যে অধিকাংশই শিশু। তাদের স্মরণে ম্যাচের আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫ (সারসংক্ষেপ)
-
চ্যাম্পিয়ন: বাংলাদেশ (১৮ পয়েন্ট)
-
রানার্সআপ: নেপাল (১২ পয়েন্ট)
-
ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড: শ্রীলংকা
-
সেরা গোলকিপার: মিলি আক্তার (বাংলাদেশ)
-
টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়: মোসাম্মাত সাগরিকা (বাংলাদেশ)
-
সর্বোচ্চ গোলদাতা: পূর্ণিমা রায় (নেপাল, ১০ গোল)
বাংলাদেশ নারী ফুটবলের জন্য এটি আরেকটি গর্বের অধ্যায়—যেখানে মাঠে প্রতিপক্ষকে এবং মাঠের বাইরে জাতিকে এনে দিল এক ঝলক হাসি ও গর্ব।