আফ্রিকার ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর দক্ষিণ কিভু প্রদেশের লোমেরা এলাকায় একটি স্বর্ণ খনিতে ধস নামার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় খনিজ শ্রমিকদের উদ্ধারে স্থানীয়রা সীমিত যন্ত্রপাতি দিয়ে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সাংবাদিক আশুজা বারাক বিবিসিকে জানান, রবিবার ভোরে খনি ধসের পর থেকে এখন পর্যন্ত ছয়জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন গুরুতর আহত। তবে মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। এক বাসিন্দা ১২ জনের মরদেহ উদ্ধারের কথা বললেও বারাক জানিয়েছেন, এখনো কোনো মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, লোমেরা অঞ্চল বর্তমানে এম২৩ বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যারা এই বছরের শুরুতে কঙ্গোর খনিজ সমৃদ্ধ পূর্বাঞ্চলের বড় একটি অংশ দখলে নেয়। তারা দুর্ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে। ২০২৩ সালের শেষের দিকে এই এলাকায় স্বর্ণের সন্ধান পাওয়ার পর থেকে হাজার হাজার মানুষ এখানে এসে অস্থায়ীভাবে খনিজ শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করে, ফলে এলাকা দ্রুত রূপ নেয় একটি বিশৃঙ্খল জনপদে।
ধসে পড়া খনিগুলোর বেশিরভাগই ছিল অস্থায়ী গর্ত, যেগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। প্রাথমিক হিসেবে জানা গেছে, অন্তত ১৫টি খনি গর্ত ধসে পড়েছে। উদ্ধার তৎপরতায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে খনিগুলোর ওপর চাপা পড়া পাথর ও মাটি। পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
একজন শ্রমিক বলেন, “আমরা রোববার রাত থেকে খুঁড়ছি, কিন্তু এখনো কোনো মরদেহ পাইনি। আমরা ক্লান্ত।”
উল্লেখ্য, এই অঞ্চলের অনেক খনি থেকেই বিশ্বব্যাপী ইলেকট্রনিক পণ্য শিল্পে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ ধাতু সরবরাহ করা হয়। তবে বেশিরভাগ খনিই অনিয়ন্ত্রিত, এবং এখানে শ্রমিকদের নিরাপত্তা মান অনেক ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত। বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সরকারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘাত চলমান। গত সপ্তাহে কাতারের মধ্যস্থতায় এম২৩ ও কঙ্গো সরকারের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি হলেও পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত।