নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী শনিবার গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় পালন করা হয়েছে। ২০১২ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এই উপলক্ষে হুমায়ূনের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, দুই পুত্র নিষাদ ও নিনিতের উদ্যোগে নুহাশপল্লীতে কোরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সকাল থেকে আশপাশের মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্ররা কোরআন তেলাওয়াত ও কবর জিয়ারতে অংশ নেন। দুপুরে মিলাদ শেষে এতিম শিশুদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। পরে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সদস্য, ভক্ত ও দর্শনার্থীরা কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং ফাতেহা পাঠ করেন।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কুতুবপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া হুমায়ূন আহমেদ প্রথমে কবিতা দিয়ে সাহিত্যচর্চা শুরু করলেও পরে উপন্যাস, নাটক, চলচ্চিত্র, ছোটগল্প ও শিশু সাহিত্যে তিনি অসাধারণ অবদান রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও লেখালেখির টানে তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে দেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে আহত হন, অলৌকিকভাবে বেঁচে ফেরেন।
তার প্রথম উপন্যাস নন্দিত নরকে (১৯৭২) পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এরপর একে একে মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, দেয়াল, এইসব দিনরাত্রি, শঙ্খনীল কারাগার, গৌরীপুর জংশনসহ বহু জনপ্রিয় উপন্যাস রচনা করেন। চলচ্চিত্র পরিচালনায়ও তার অবদান প্রশংসিত হয়েছে, বিশেষ করে আগুনের পরশমণি, শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন এবং ঘেঁটুপুত্র কমলা।
একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যকীর্তি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। তার সাহিত্য, জীবনদর্শন এবং মনন আজও কোটি পাঠকের অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।