Ridge Bangla

গোপালগঞ্জে চলছে কারফিউ, যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ১৪

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত পদযাত্রা ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৬ জুলাই) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে পতিত স্বৈরাচারী সরকার আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে পুরো শহরে চরম আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করা হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সন্ধ্যার পর জারি করা হয় কারফিউ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৪ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। তবে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান।

কারফিউর কারণে বৃহস্পতিবার সকালেও শহরজুড়ে অচলাবস্থা বিরাজ করে। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকায় হাট-বাজারে মানুষের উপস্থিতি ছিল সীমিত। প্রধান সড়কগুলো ফাঁকা ছিল এবং সাধারণ মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হননি।

জেলা কারাগার এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য মোতায়েন থাকলেও শহরের অন্যান্য এলাকায় তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি।

এনসিপির ঘোষিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার অনুষ্ঠিত ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করেই উত্তেজনার সূচনা হয়। আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠন এই কর্মসূচি বানচাল করতে শুরু থেকেই বিভিন্ন অপতৎপরতা চালিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ। কর্মসূচি শুরুর আগেই পৌর পার্ক মাঠ এলাকায় ইউএনও ও পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চার প্লাটুন সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। শহরের উলপুর ও টেকেরহাট এলাকায় সকাল থেকেই ভাঙচুর, হামলা ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া যায়। দুপুরে সমাবেশস্থল পৌর পার্ক মাঠেও হামলার ঘটনা ঘটে।

এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাদারীপুরের উদ্দেশে রওনা দিলে লঞ্চঘাট এলাকায় আবারও সংঘর্ষ বাধে, যেখানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

সন্ধ্যার পর শহর এক রকম রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। গোলাগুলি, হাতবোমা বিস্ফোরণ ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ার কারণে পুরো শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই সহিংসতায় চারজন নিহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সন্ধ্যার পর শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিছু রিকশা সীমিতভাবে চললেও অন্য সব যানবাহন এবং দোকানপাট ছিল সম্পূর্ণ বন্ধ।

এখনো শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে থাকলেও টহল কম দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে:

আরো পড়ুন