বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় আর ব্যবহার হবে না ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ইভিএম ব্যবহারের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) অষ্টম কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, “ইভিএম এখন থেকে আর কোনো নির্বাচনেই ব্যবহৃত হবে—না জাতীয় নির্বাচনে, না স্থানীয় সরকার নির্বাচনে। এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এখন একটি পৃথক কমিটি গঠন করে ইভিএম বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে।”
ইসির তথ্যমতে, নির্বাচনে প্রযুক্তি ব্যবহারের অংশ হিসেবে ইভিএম প্রকল্পের আওতায় প্রায় দেড় লাখ মেশিন, ছয়টি সফটওয়্যার, ৯,২০০টি র্যাক এবং পাঁচটি যানবাহন কেনা হয়। এর জন্য মোট ৩,৮২৫ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়, যার ৯৬ শতাংশ অর্থ ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৯৬.৫ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, দেশে প্রথমবারের মতো ২০১১ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটি ওয়ার্ডে বুয়েট নির্মিত ইভিএম ব্যবহার করা হয়। পরে রাজশাহীতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ব্যবহারে বিরতি আসে। সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদার আমলে আবারও উদ্যোগ নিয়ে বিএমটিএফ দিয়ে নতুন ইভিএম তৈরি করে ব্যবহার শুরু হয়। তবে ২০১৮ সালে কেনা দেড় লাখ ইভিএমের মধ্যে বাস্তবে মাত্র ছয়টি আসনে সেগুলো ব্যবহার করা হয়েছে।
বর্তমানে এসব মেশিন জেলা পর্যায়ের গুদাম ও বিএমটিএফের ওয়্যারহাউজে সংরক্ষিত রয়েছে। ভবিষ্যতে সেগুলোর ব্যবস্থাপনা কীভাবে হবে, তা নির্ধারণ করতেই গঠন করা হচ্ছে পর্যালোচনা কমিটি।