মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার হওয়া ৩৬ জন বাংলাদেশি প্রবাসীর বিরুদ্ধে ‘জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার’ অভিযোগে ঢাকার বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (৭ জুলাই) মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান মামলার এজাহার গ্রহণ করে তদন্ত কর্মকর্তা এটিইউ’র পরিদর্শক কে. এম. তারিকুল ইসলামকে আগামী ১১ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলাটি দায়ের করেন এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) ইনটেলিজেন্স শাখার পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল বাতেন। ৫ জুলাই দায়েরকৃত এ মামলায় এরই মধ্যে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো তিনজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন—নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও জাহেদ আহমেদ।
তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে এই তিনজনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে শুনানি মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে পরস্পরের সহযোগিতায় মালয়েশিয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন লঙ্ঘন করে দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে উগ্রবাদ প্রচার ও সদস্য সংগ্রহের কাজ করতেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামিরা নিয়মিতভাবে নির্ধারিত চাঁদা প্রদান করতেন এবং ই-ওয়ালেট ও মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ব্যবহার করে সিরিয়া ও বাংলাদেশে অর্থ পাঠাতেন।
মালয়েশিয়ার পুলিশের মহাপরিদর্শক খালিদ ইসমাইল এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ধারাবাহিক অভিযানে ৩৬ জন বাংলাদেশি আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই স্থানীয় শিল্প ও নির্মাণ খাতে কর্মরত ছিলেন। পাঁচজনের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনা হয়েছে।
মালয়েশিয়া পুলিশের দাবি, এই প্রবাসীরা বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্য থেকে নতুন সদস্য সংগ্রহ করতেন এবং আইএস-এর জন্য অর্থ সংগ্রহ ও প্রেরণের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।
তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, এই প্রবাসীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং মালয়েশিয়া পুলিশের বক্তব্য সম্পর্কেও তারা সরকারিভাবে অবগত নন। তিনি বলেন, “এ নিয়ে সরকারিভাবে আমাদের কাছে কোনো বার্তা আসেনি।”