গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা—এমন তথ্য উঠে এসেছে বিবিসির অনুসন্ধানী ইউনিট ‘বিবিসি আই ইনভেস্টিগেশন’-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে।
বুধবার (৯ জুলাই) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা ও এক অজ্ঞাত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মধ্যে ১৮ জুলাইয়ের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে, যার সত্যতা যাচাই করেছে বিবিসি আই। সেই অডিওতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “যেখানেই ওদের পাওয়া যাবে, গুলি করা হবে।”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই নির্দেশের পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সামরিক বাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহ করে এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, জুলাই-আগস্ট মাসে চলা সেই সহিংসতায় অন্তত ১,৪০০ জন মানুষ নিহত হয়েছেন।
বিবিসি জানায়, অডিওটি প্রথম ফাঁস হয় চলতি বছরের মার্চ মাসে এবং বর্তমানে এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন এবং তার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলছে।
আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, “এই টেপের সত্যতা আমরা নিশ্চিত নই।” তবে প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু শেখ হাসিনা নন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সাবেক সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের আরও অনেকে এই সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন।
এ পর্যন্ত ২০৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, যাদের মধ্যে ৭৩ জন আটক রয়েছেন। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।