শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিরঘাট এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের রক্ষা বাঁধে ফের ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ৫টি বসতবাড়ি ও ৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ভাঙনের আশঙ্কায় আরও অন্তত ১০টি দোকান সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, বিকেল ৪টার দিকে হঠাৎ করেই ভাঙন শুরু হয়। মুহূর্তেই বসতবাড়ি ও দোকানগুলো নদীতে ধসে পড়ে। বাজারের ব্যবসায়ী রুবেল মাদবর বলেন, “শ্রমিক না থাকায় পরিবারের লোকজন দিয়েই দোকানের মালামাল সরাতে হচ্ছে। এত দ্রুত সবকিছু নদীতে চলে যাবে, ভাবতেই পারিনি।”
স্থানীয় বাদশা শেখ বলেন, “নদীর স্রোত এখন পাড় ঘেঁষে যাচ্ছে। এর ফলে ভাঙন আরও বেড়েছে। আমরা শক্ত ও স্থায়ী বেরিবাঁধ চাই।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতু প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ কিলোমিটার রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত বছর নভেম্বরেও একই এলাকায় ভাঙনে ১০০ মিটার বাঁধ বিলীন হয়। তখন সাড়ে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলে তা সাময়িকভাবে সংস্কার করা হয়। এ বছরের ঈদের দিন ভোরে নতুন করে আড়াইশ মিটার অংশ ধসে পড়ে। আর সোমবারের ভাঙন আবারও বিপদের মাত্রা বাড়িয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শাজাহান সিরাজ জানিয়েছেন, “ভাঙনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দ্রুত জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করা হবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধটি স্থায়ী ও মজবুত না হলে মাঝিরঘাট এলাকার রাস্তাঘাট, হাটবাজার, বসতবাড়িসহ শতাধিক স্থাপনা ঝুঁকিতে পড়বে। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।