ঢাকার মগবাজারে একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে সৌদি প্রবাসী মনির হোসেন, তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার স্বপ্না ও ছেলে আরাফাতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার দুদিন পর নিহত মনিরের ভাই নুরুল আমিন রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার পর মনিরের চাচাতো চাচা রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক।
ঘটনাটি ঘটে গত রোববার (২৯ জুন) মগবাজারের ‘সুইট স্লিপ’ নামের একটি আবাসিক হোটেলে। অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামে।
পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মরদেহে কোনো দৃশ্যমান আঘাতের চিহ্ন ছিল না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মনির ও তার ভাই নুরুল আমিন দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে থাকেন। মনির ছিলেন সৌদি আরবে, আর নুরুল ইতালিতে। দেশে এসে মনির তার চাচাতো চাচা রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে কেনা জমি ও বাড়ি-সংক্রান্ত হিসাব চাইলে তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়।
২৮ জুন চিকিৎসার উদ্দেশ্যে মনির তার স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় আসেন। রফিকুলও তাদের সঙ্গে যুক্ত হন। নিউ ইস্কাটনের একটি হাসপাতালে গেলে সিরিয়াল না পেয়ে তারা মগবাজারের একটি হোটেলে উঠেন।
সেদিন বিকেলে মনির ও রফিকুল কাছের একটি খাবারের হোটেল থেকে খাবার কিনে আনেন। সন্ধ্যায় রফিকুল খাবার কক্ষে পৌঁছে দিয়ে নিজ বাসায় ফিরে যান। রাতেই মনির ও তার পরিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।
নুরুল আমিন অভিযোগ করেছেন, সম্পত্তি ও আর্থিক লেনদেনের বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে খাবারে বিষ মিশিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহতদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ফরেনসিক বিভাগ জানিয়েছে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে সংগৃহীত নমুনা মহাখালীর রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলেই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে মৃত্যু কীভাবে হয়েছে।