যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই তেহরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি। গতকাল শনিবার (২৯ জুন) সিবিএস নিউজ এই তথ্য জানিয়েছে।
১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রও তেহরানের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। তেল আবিব দাবি করে, এ হামলা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। তবে ইরান বরাবরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানিয়েছেন, হামলায় স্থাপনাগুলোর ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা গুরুতর। যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি। অপরদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কয়েক দশক পিছিয়ে গেছে।
তবে আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেন, “এখনো কিছু স্থাপনা টিকে আছে।” গত শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “তারা (ইরান) কয়েক মাস বা এরও কম সময়ে কিছু সেন্ট্রিফিউজ চালু করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করতে পারবে।”
একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠেছে—হামলার আগে ইরান ৪০৮ দশমিক ৬ কেজি (প্রায় ৯০০ পাউন্ড) উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত সরিয়ে নিতে পেরেছিল কি না। এই ইউরেনিয়াম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করা ছিল, যা বেসামরিক ব্যবহারের জন্য অতিরিক্ত হলেও পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য কিছুটা ঘাটতি রেখে উপযুক্ত। তবে এটি আরও পরিশোধিত করে ৯০ শতাংশ মাত্রায় উন্নীত করলে ৯টির বেশি পারমাণবিক বোমা তৈরির উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
বর্তমানে ইরানি আইন প্রণেতারা আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের পক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ফোরদো পরিদর্শনের গ্রোসির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।
গ্রোসি বলেন, “সেখানে কী আছে, কোথায় আছে এবং কী ঘটেছে—তা নিশ্চিত করতে আমাদের সেখানে থাকার সুযোগ প্রয়োজন।”