পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশী নর্থবেঙ্গল পেপার মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফজলুল হকের বিদায় সংবর্ধনা উপলক্ষে ৩০ জুন উপজেলার সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চলমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষা মহলে, অভিভাবকদের মধ্যে ও সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ৩০ জুন প্রধান শিক্ষক ফজলুল হকের শেষ কর্মদিবসকে স্মরণীয় করতে বিদ্যালয় চত্বরে আয়োজিত হচ্ছে এক বিশাল আয়োজন, যাতে আমন্ত্রিত প্রায় ৭০০ অতিথির জন্য ভুরিভোজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে গরু ও খাসি কেনার অভিযোগ উঠেছে।
অভিভাবকরা বলছেন, ব্যক্তিগত বিদায় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বন্ধ অনৈতিক এবং প্রশ্নবিদ্ধ। স্থানীয় শিক্ষকরা জানান, ফজলুল হক দীর্ঘদিন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্বে থাকায় প্রভাব খাটিয়ে অন্য বিদ্যালয়গুলোতেও পরীক্ষাসমূহ স্থগিত করিয়েছেন। অথচ সরকারিভাবে এ দিন ছুটির কোনো ঘোষণা নেই।
প্রধান শিক্ষক ফজলুল হকের বিরুদ্ধে অতীতেও বিদ্যালয়ের তহবিল অপব্যবহার, ভূয়া বিল দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা তার জমি কেনা, বহুতল ভবন নির্মাণ ও রাজনৈতিক সুবিধাবাদ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পেপার মিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল খায়ের মো. হাবিবুর রহমান জানান, ফান্ড খরচের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি; শুধুমাত্র চা-বিস্কুট আপ্যায়নের কথা শোনা গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাস বিষয়টি জানেন না বললেও, দায়িত্বপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সোলাইমান হোসেন জানান, ৩০ জুন পাঠদান চলবে এবং তিনিও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
সব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বলেন, “অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ম মেনেই হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, ঈশ্বরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদ দীর্ঘদিন শূন্য থাকায় প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগে অনিয়ম বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।