দেশের অন্যতম ব্যস্ততম কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যেন এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভয়াবহ দুর্ঘটনা আর প্রাণহানিতে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ ও সচেতন মহল বারবার সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
রাজধানীর সঙ্গে সংযুক্ত এই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে ঈদযাত্রার চারদিনে ৮টি ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন এবং আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী। শুধু লোহাগাড়া জাঙ্গালিয়া ঢালা এলাকায় গত তিনদিনেই নারী-শিশুসহ ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন।
বিগত দিনের এসব দুর্ঘটনায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। দুর্ঘটনার প্রতিবাদে সড়কপথে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সভা-সমাবেশ হয়েছে। দুর্ঘটনার প্রবণতা কমাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার জোর দাবি উঠেছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বর্তমান অবস্থা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। মহাসড়কের বেশিরভাগ অংশের প্রশস্ততা মাত্র ১৮ থেকে ৩৪ ফুট, যা ব্যস্ততম এই রুটের জন্য খুবই অপ্রতুল। ১৪৮ কিলোমিটার এই সড়কে বাসে যাতায়াতে সময় লাগে প্রায় ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টা।
অতিরিক্ত বাঁক, ছোট-বড় উপসড়ক থেকে হঠাৎ করে গাড়ি উঠে আসা, চালকদের অসাবধানতা এবং স্পিড কন্ট্রোল না থাকা—এসব কারণে মহাসড়কটি ভয়াবহ দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে।
লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের টিম লিডার রাখাল চন্দ্র রুদ্র বলেন, “গত তিন দিনে মহাসড়কের এ অংশে তিনটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করে আমরা যেসব কারণ পেয়েছি তার মধ্যে রয়েছে লবণবাহী গাড়ি থেকে সড়কে পড়া পানি রাস্তাকে পিচ্ছিল করে ফেলা, বিপজ্জনক বাঁক, ও বাইরের জেলার অনভিজ্ঞ চালকদের গাড়ি চালানো।”
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ওসি মেহেদী হাসান বলেন, “এই সড়কে দ্রুতগতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। চালকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। লবণ পরিবহনের সময় নির্গত পানি সড়কটিকে ভয়ংকর পিচ্ছিল করে ফেলে। তাই দুর্ঘটনার ঝুঁকি সবসময় থেকেই যাচ্ছে।”