আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) পরিচালিত ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ ইসরায়েলের নৌবাহিনী আটক করে আশদাদ বন্দরে নিয়ে গেছে। স্থানীয় সময় সোমবার রাতে ১২ জন মানবাধিকারকর্মীসহ জাহাজটি ইসরায়েলের জলসীমা অতিক্রম করার পর এটি থামিয়ে দেওয়া হয়। গাজার জন্য জরুরি ত্রাণ বহন করছিল এই জাহাজটি।
আটক মানবাধিকারকর্মীদের ইসরায়েলের রামলে শহরের একটি আটক কেন্দ্রে রাখা হতে পারে এবং পরবর্তীতে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা আদালাহ। তারা আটক ব্যক্তিদের আইনি সহায়তা দিচ্ছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “ম্যাডলিন” জাহাজটি আশদাদ বন্দরে পৌঁছেছে এবং যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রকাশিত ছবিতে সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জাহাজটিতে থাকা অন্যান্য মানবাধিকারকর্মীরা হলেন: ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য রিমা হাসান, ইয়াসেমিন আচার, ব্যাপতিস্ত আন্দ্রে, থিয়াগো আভিলা, ওমর ফায়াদ, পাস্কাল মৌরিয়েরাস, ইয়ানিস মোহামদি, সুলাইব ওর্দু, সার্জিও তোরিবিও, মার্কো ফন রেনেস ও রিভা ভিয়া।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গিভির কারাগার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে ১২ জন অধিকারকর্মীকে পৃথক কক্ষে রাখা হয়।
গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এর ফলে অনাহারে বেশ কয়েকটি শিশুর মৃত্যু হয়। এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে ও সরাসরি সহায়তা পৌঁছে দিতে ‘ম্যাডলিন’ ১ জুন ইতালির সিসিলির কাতানিয়া শহর থেকে যাত্রা শুরু করে। জাহাজটির নামকরণ করা হয় গাজার প্রথম নারী মৎস্যজীবী ম্যাডলিনের নামে।
জাহাজটিতে ছিল শিশুদের দুধ, ডায়াপার, স্যানিটারি পণ্য, পানি বিশুদ্ধকরণ কিট, চিকিৎসা সরঞ্জাম, চাল, ময়দা ও কৃত্রিম অঙ্গসহ অত্যাবশ্যকীয় ত্রাণসামগ্রী। ফ্রি ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের ভাষ্য অনুযায়ী, গাজার ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ চরম খাদ্যসংকটে রয়েছেন।
স্থানীয় সময় রবিবার মধ্যরাতে, গাজার উপকূল থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজটি ইসরায়েলি নৌবাহিনী থামিয়ে দেয় এবং সোমবার রাতে বন্দরে নিয়ে যায়।
