Ridge Bangla

কুষ্টিয়ার পদ্মা-গড়াই নদীতে অবৈধ বালুর রমরমা ব্যবসা

কুষ্টিয়ার পদ্মা ও গড়াই নদীজুড়ে গড়ে উঠেছে অবৈধ বালু উত্তোলনের এক বিশাল সাম্রাজ্য। প্রতিবছর এসব নদী থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার বালু উত্তোলন হলেও সরকার রাজস্ব পাচ্ছে মাত্র আড়াই কোটি টাকা। প্রকাশ্যেই চলছে এই বালুর কারবার, আর কারবার রক্ষা করতে বসানো হয়েছে সশস্ত্র পাহারা।

নদীর দুই তীরে গড়ে ওঠা অন্তত ২১টি বালুমহালের মধ্যে মাত্র চারটি স্পট থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি থাকলেও, কার্যত নিষিদ্ধ ১৭টি স্পট থেকেই চলছে অবৈধ উত্তোলন। পরিবেশ, নদীর নাব্যতা, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা এবং আইনি জটিলতার কারণে এগুলো বন্ধ থাকার কথা থাকলেও বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

নদীতীরবর্তী এলাকায় দিন-রাত চলছে বালু উত্তোলনের কাজ। দুটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ—হার্ডিঞ্জ ও রেল ব্রিজের পাশেই অবাধে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু, যার ফলে শতবর্ষী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ভালো মানের বালুর জন্য দূর-দূরান্ত থেকেও ক্রেতারা আসছেন। একাধিক গ্রুপ এসব ঘাট নিয়ন্ত্রণে সশস্ত্রভাবে সক্রিয়। সংঘর্ষও হয়েছে বিভিন্ন সময়। রাতের বেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়া হয়।

বালু উত্তোলনের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থাকায় এটি এখন অর্থনৈতিক কার্যক্রম ছাড়াও একটি স্পর্শকাতর রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। সরাসরি জড়িত না থাকলেও একাধিক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার নাম উঠে এসেছে যাঁরা এসব কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, “সরকার এখানে বিশাল রাজস্ব হারাচ্ছে। পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালালেও পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ানক। এমনকি ফায়ারিংয়ের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে যেতে হয়।” তিনি আরও জানান, সাংবাদিকদের হুমকি ও হামলার চেষ্টাও হয়েছে অতীতে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইজারা না দেওয়ার পরও কীভাবে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন চলছে—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কেউ চুরি করলে সেটাকে তো আর বৈধ বলা যাবে না। প্রশাসনও সবসময় তাদের সাথে পেরে ওঠে না।”

আরো পড়ুন