পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ভয়াবহ সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছে ৫৪ জন সন্ত্রাসী। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দেওয়া তথ্যমতে, উত্তর ওয়াজিরিস্তানের হাসান খেল এলাকায় ২৫, ২৬ ও ২৭ এপ্রিল রাতে পরপর তিনদিন সন্ত্রাসীরা সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢোকার চেষ্টা করে।
সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সতর্ক অবস্থানে থাকা সেনারা সময়মতো প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং তীব্র গোলাগুলির মধ্যে পড়ে ৫৪ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়। অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরকও উদ্ধার করা হয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিহতদের ‘খাওয়ারিজ’ সদস্য বলে উল্লেখ করেছে। তারা দাবি করে, এই সন্ত্রাসীরা বিদেশি গোষ্ঠীর নির্দেশে পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। উল্লেখ্য, ‘খাওয়ারিজ’ শব্দটি মূলত নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর সদস্যদের বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।
সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “সীমান্ত রক্ষায় আমরা সর্বদা কঠোর প্রস্তুত। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার কোনো অপচেষ্টাই আমরা সফল হতে দেব না।”
এই মাসের শুরুতেও একই এলাকায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং ৮ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২২ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে টিটিপির যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলার পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই সন্ত্রাসী হামলার হার আগের মাসের তুলনায় ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সব মিলিয়ে সীমান্ত পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত, এবং ভবিষ্যতে আরও সংঘাতের আশঙ্কা থাকছে বলে সতর্ক করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।