পাবনার ঈশ্বরদীতে সরকারি গুদামে নির্ধারিত চাল সরবরাহ না করায় ৪৪টি চালকলের নিবন্ধন বাতিল করেছে খাদ্য বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহিনুর আলম।
জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ঈশ্বরদী উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহের লক্ষ্যে ৯৯টি চালকলের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ২৫৮ মেট্রিক টন। প্রতি কেজি সেদ্ধ চাল ৪৭ টাকা এবং আতপ চাল ৪৬ টাকা দরে কেনা হতো।
খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরদীতে মোট ১৪৩টি চালকল থাকলেও, চুক্তির আওতায় আনা হয়েছিল ৯৯টি। এর মধ্যে ৮৩টি চালকল সম্পূর্ণ চাল সরবরাহ করেছে, ১৬টি আংশিক সরবরাহ করেছে এবং ৪৪টি কোনো চালই সরবরাহ করেনি। ফলে পুরো মৌসুমে মাত্র ৪ হাজার ৬৪৩ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৬৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
যেসব চালকল আংশিক সরবরাহ করেছে, তাদের জামানতও আংশিকভাবে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চালকল মালিক বলেন, বর্তমানে এক কেজি চাল উৎপাদনে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা খরচ হয়, কিন্তু সরকার সেই চাল ৪৫ টাকা দরে কিনে। এই লোকসানে চাল সরবরাহ করা সম্ভব নয়, তাই ইচ্ছা থাকলেও অনেকেই তা পারেননি।
আরেক চালকল মালিক জানান, চাল সরবরাহে লোকসান হওয়ায় তারা একাধিকবার চালের দরের পুনঃনির্ধারণ চেয়েছিলেন, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তিনি আরও বলেন, যাদের লাইসেন্স বাতিল হয়েছে, তারা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে আবেদন করবেন, যেন তাদের নিবন্ধন বাতিল না করা হয়।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহিনুর আলম বলেন, যারা সরকারি চুক্তি পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। কারণ সরকারি চুক্তি লঙ্ঘন করা একটি গুরুতর অপরাধ।