ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর আব্বাসের কাছে শহীদ রাজাই বন্দরে ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৭০০ জনেরও বেশি। ইরানি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা-র বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত শহীদ রাজাই বন্দরে এই শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। ইরানের সংকট ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন জাফারি জানিয়েছেন, বন্দরে রাসায়নিক কনটেইনারের দুর্বল সংরক্ষণ ব্যবস্থার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনি জানান, পূর্বেও কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সতর্ক করেছিল।
তবে ইরান সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, রাসায়নিক পদার্থ থেকেই বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে, যদিও এখনো নির্দিষ্ট কারণ নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
শহীদ রাজাই ইরানের সবচেয়ে বড় এবং আধুনিক কনটেইনার বন্দর, যা হরমুজ প্রণালির উত্তরে, বন্দর আব্বাস শহরের ২৩ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। উল্লেখ্য, বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ তেল এই প্রণালি দিয়ে পরিবাহিত হয়।
বিস্ফোরণের পরপরই প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান ঘটনাস্থলে তদন্তের নির্দেশ দেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সেখানে পাঠান। রোববার (২৭ এপ্রিল) দুর্ঘটনার কারণে বন্দর আব্বাসের সব বিদ্যালয় ও অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখা যায়, বিস্ফোরণের ঘণ্টা পরও বন্দরের আকাশে বিশাল কালো-কমলা ধোঁয়া ছড়িয়ে ছিল। আশপাশের বহু ভবনের জানালা ভেঙে পড়ে, এমনকি ২৬ কিলোমিটার দূরের কিশ দ্বীপ থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
উল্লেখ্য, ইরানের জ্বালানি ও শিল্প খাতে এর আগেও একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে, যেগুলোর জন্য অবহেলাকে দায়ী করা হয়। বিস্ফোরণের সময় ওমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা চলছিল, তবে এই দুটি ঘটনার মধ্যে সরাসরি কোনো সংযোগের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।