পাকিস্তানের করাচিতে প্রতিরক্ষা বিভাগের আবাসন প্রকল্প ডিফেন্স হাউজিং অথরিটির একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের মৃত্যু নিয়ে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, তিনি সপ্তাহখানেক আগে মারা গেছেন। কিন্তু ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়াবহ তথ্য— তার মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৮ থেকে ১০ মাস আগে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হুমাইরার মস্তিষ্ক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সম্পূর্ণভাবে পচে গিয়েছিল, এমনকি তার মেরুদণ্ডও অবশিষ্ট ছিল না। মরদেহে বাদামি রঙের পোকা থিকথিক করছিল। মুখ ও চোখ চেনার উপায় ছিল না। শরীরের কিছু অংশে কেবল হাড় ও পচা কালচে চামড়ার স্তর পাওয়া গেছে। তবে মরদেহে কোনো হাড় ভাঙা বা বাহ্যিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহটি হুমাইরার বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে মৃত্যুর কারণ এখনও নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি, কারণ টক্সিকোলজি পরীক্ষার রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই রিপোর্টই মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উন্মোচনে সাহায্য করতে পারে।
গত ৮ জুলাই পুলিশ হুমাইরার মরদেহ উদ্ধার করে। জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ভাড়াবাকি রাখছিলেন। বাড়ির মালিক বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের আদেশে পুলিশ ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে পচাগলা মরদেহ উদ্ধার করে।
মরদেহ উদ্ধারের পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে হুমাইরার বাবা মরদেহ গ্রহণে প্রথমে অস্বীকৃতি জানান। পরে তার ভাই নাভিদ আসগর লাহোর থেকে এসে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মরদেহ গ্রহণ করেন।
মাত্র ৩২ বছর বয়সে হুমাইরার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে পাকিস্তানের বিনোদন অঙ্গনে শোক ও বিস্ময়ের ছায়া নেমে এসেছে। কীভাবে এতদিন কেউ জানতে পারল না তার মৃত্যুর কথা, সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে। মৃত্যুর সঠিক কারণ ও ঘটনার পেছনের রহস্য উদ্ঘাটনের অপেক্ষায় আছে সবাই।